করোনা আবহে রাজ্যে হিংসার ঘটনায় সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিংসায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এদিন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ''দুর্যোগের সময় দাঙ্গাবাজি করছে! পুলিশকে বলেছি, কঠোর শাস্তি দিতে। লকডাউন ভেঙে যারা দাঙ্গা করেছে, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। সে যেই হোক না কেন, এ হোক বা বি হোক, কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে''।
এ প্রসঙ্গে এদিন নাম না করে বিজেপি নেতাদের নিশানা করে মমতা আরও বলেন, ''লজ্জা করে না, হিন্দু-মুসলমান করছেন! যার যার ধর্ম নিজের কাছে রাখুন। সব ধর্মকে সম্মান জানিয়ে বাংলা চলে। মানুষকে পণ্য হিসেবে দেখবেন না...আপনাদের নেতারা টুইট করে বেড়াচ্ছেন, এখানে হিন্দু এই করেছে, ওখানে মুসলিমরা এই করেছে...''।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বাংলার রেড জোন তিন ভাগ করে ছাড় ঘোষণা মমতার
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণের ভয়, সংঘর্ষের আবহ মালদা-হুগলিতে, আটক ৪২
মমতা আরও বলেন, ''আমিও বিরোধী ছিলাম। কোথাও হিংসা হলে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। অভিযোগ থাকলে গণতন্ত্রে জানানোর ব্যবস্থা আছে। বাবরি মসজিদ নিয়ে কলকাতায় দাঙ্গা হয়েছিল। সেদিন আমি একা রাস্তায় নেমেছিলাম, মানুষে মানুষে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে নেমেছিলাম রাস্তায়। যাতে দাঙ্গা না হয়। সেদিন আর কোনও রাজনৈতিক নেতাকে রাস্তায় নামতে দেখিনি। আজ যাঁরা যাঁরা বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন, রাস্তায় নেমে ঝাড়ু দিন, যে নার্সরা কাজ করছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ান''।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে বাংলার দুই জেলায় হিংসার ছবি সামনে এসেছে। মালদার মানিকবাড়ি গ্রামে ১২ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই শুরু হয় ঝামেলা। জানা গিয়েছে রবিবার রাতে সিল ভেঙে মানিকবাড়ির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা চন্ডিপুর গ্রামে এসে হামলা চালায়, বেশ কয়েকজনকে মারধরও করেন। অন্যদিকে, হুগলির ভদ্রেশ্বরেও ৫ জনের দেহে করোনা ধরা পড়তেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তেলেনিপাড়ায় বোমাবাজিও চলে বলে অভিযোগ। বহু গাড়িতে ভাঙচুর করে দোকানে দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এদিন যেভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন