বাংলার মতই কর্ণাটকেও প্রত্যাখ্যাত বিজেপি। এতেই সে রাজ্যের ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন, পশ্চিমবঙ্গের মতই দক্ষিণী রাজ্যেও নির্বাচনে মানুষ ‘নো ভোট টু বিজেপি’ করেছে। কর্ণাটকে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতার কুর্সি দখল করেছে কংগ্রেস। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন কংগ্রেসের নাম মুখে না নিলেও বলেছেন, ‘আমি জয়ী দলকে কুর্নিশ জানাই।’ রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র জেরেই হাত শিবিরের এই সাফল্য বলে তুলে ধরছে কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কী একই মতামত? রাহুল গান্ধীর প্রসঙ্গ উঠতেই অবশ্য নীরব থাকলেন তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতা।
কর্ণাটকে বিজেপির পরাজয়ের পরই এদিন দুপুরে সোশাল মিডিয়া পোস্ট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অভিনেতা সলমান খান তাঁর বাড়ি ছাড়ার পর বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই কর্ণাটকের ভোটের ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করেছেন তিনি।
কী বলেছেন মমতা?
‘ঔদ্ধত্য, অহংকার, দুর্বিসহ ব্যবহার, এজেন্সি পলিটিক্সের বিরুদ্ধে কর্ণাটকের মানুষ নো ভোট টু বিজেপি করেছে। আমি কর্ণাটকবাসীদের কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি জয়ী দলকেও স্যালুট জানাচ্ছি। কুমারস্বামীও ভাল করেছেন। ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশেও বিজেপি হারবে। বিজেপির শেষের শুরু হল।’
এই জয়ের নেপথ্যে রাহুল গান্ধীর কী ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন শুনেই মমতার জবাব, ‘যা বলার বলে দিয়েছি।’
এদিন শুভেচ্ছা টুইটেও একবারও কংগ্রেসের নাম লেখেননি মমতার। সাংবাদিক বৈঠকেও একই ছবি। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কর্ণাটকের ফলাফল প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছে কর্ণাটকের মানুষ। তাদের ধন্যবাদ। মানুষ চাইলে কর্তৃত্ববাদী সরকার, তাদের একচ্ছত্র আধিপত্যকেও দমন করতে পারে। পরিবর্তনের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য কর্ণাটকের মানুষকে কুর্নিশ। পাশবিক, একচ্ছত্র ক্ষমতায় বিশ্বাসী রাজনীতির পরাজয় ঘটেছে। যখন মানুষ বহুত্ববাদী ও গণতান্ত্রিক শক্তির জয় চায়, কেউ তাদের স্বতঃস্ফূর্ততাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।’
একুশের ভোটের পর ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচার থেকে কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীকে আগাগোড়া আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী রাজনীতিতেও হাত শিবিরকে গুরুত্ব দিতে অনিহা দেখিয়েছেন তিনি। এমনকী গত মার্চে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ‘রাহুল গান্ধী যতদিন থাকবে ততদিন বিজেপিকে কেউ খারাপ ভাববে না। রাহুল গান্ধীই নরেন্দ্র মোদীর সবচেয়ে বড় টিআরপি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়ের থেকে বিজেপির পরাজয়কেই বেশি করে তুলে ধরতে মরিয়া।