সিবিআই দফতরে এল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ১৮ টি ছবি। এই প্রথম মমতার ছবি হেফাজতে নিল সিবিআই। এই মুহূর্তে সিজিও কমপ্লেক্সে ওই ছবিগুলির খুঁটিনাটি পরীক্ষা করছে সিবিআইয়ের বিশেষ দল। এই ছবিগুলিতে শিল্পী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা রয়েছে। ছবিগুলি সঠিক মূল্যে বিক্রি হয়েছে কি না এখন তা খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, ছবিগুলো খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ সিবিআই দফতরে যান চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। এছাড়া আরও তিনজন চিত্রশিল্পীও হাজির ছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে। সেখানেই শুভাপ্রসন্ন এবং অন্যান্য চিত্রকররা যাচাই করেন মমতার ছবিগুলির মান। ক্যামেরায় ছবিগুলির ছবি তুলে এবং তা বড় করে (জুম) করে নানাভাবে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ছবির গুণগত মান, ছবিগুলি কী দিয়ে আঁকা হয়েছে, এসব কিছুই অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে সিবিআই দফতরে।
আরও পড়ুন: জেলে যেতে রাজি, স্বাধীনতা সংগ্রাম করছি, দেশ পরাধীন হয়ে গিয়েছে: মমতা
এদিকে, চিত্র প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার একজন সহকারীও দীর্ঘসময় ধরে সিবিআই দফতরে হাজির ছিলেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, মোহতার সহকারি দুপুর বারোটা নাগাদ সিবিআই দফতরে ঢোকেন এবং বেরিয়ে যান সন্ধে সাড়ে ছ'টা নাগাদ। তাঁকেও ওই ছবিগুলির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ছবি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত খতিয়ে দেখবেন সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সিবিআই মনে করছে এই ছবিগুলি বাজার মূল্যের থেকে অনেক বেশি দরে বিক্রি করা হয়েছিল। যদিও শিল্পীদের একাংশ মনে করেন "ছবির (শিল্পের) নির্দিষ্ট কোন বিক্রয় মূল্য হয় না।"
আরও পড়ুন: নারদ তদন্তে তৃণমূল সাংসদদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, লোকসভার অধ্যক্ষকে সিবিআই-এর চিঠি: সূত্র
এর আগে দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের পাঁচ-সদস্যের একটি বিশেষ দল কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে আসে। জানা গিয়েছে, এই বিশেষ দলটি মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবিগুলি নিয়েই তদন্ত করবে। দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ তদন্তকারীদের নিয়েই গঠিত এই দল। ছবি সংক্রান্ত তদন্তে কোনওরকম ঘাটতি যাতে না থাকে, সে জন্যই এই দলকে কাজে লাগানো হয়েছে বলে খবর। এই তদন্তে পরবর্তী বড় পদক্ষেপ গ্রহণের আগে প্রস্তুতি পর্বে কোনওরকম ফাঁক রাখতে চান না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। তাই ছবি সংক্রান্ত বিষয়ে পারদর্শী তদন্তকারীদেরই এই তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরে এই ছবি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন বিশেষজ্ঞরা। তদন্তকারী আধিকারিকরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। বিশেষজ্ঞদের কাছে তদন্তকারীরা জানতে চান, ছবিগুলির বাজার দর কত হতে পারে। সারদাকাণ্ডে এই ছবিগুলির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ সিবিআইয়ের। তাদের ধারণা, এই ছবি ক্রয়-বিক্রিয়ের পিছনে একটি চক্র কাজ করেছে।