হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি রুটের বন্দে ভারতে পাথর হামলা ঘটনা ঘটেছে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার। বৃহস্পতিবার সকালে সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই দুপুরে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া প্রতিক্রিয়ায় বাংলাকে বদনামের নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
এ দিন গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বন্দ ভারতে হামলার ঘটনা বিহারে ঘটেছে। বিহারের মানুষের ক্ষোভ থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে ক্ষোভ থাকালে তার যদি ঘটনা একটা ঘটিয়েও থাকে সেটা নিয়ে বিহারকে তো অপমান করা যায় না। আমি মনে করি তাদেরও পাওয়ার অধিকার আছে। আজকে বিজেপি নেই বলে তারাও বা পাবে না কেন?'
সেমি স্পিডের বন্দে ভারতকে দেশের গতিসম্পন্ন উন্নতির প্রতীক বলে প্রচার করছে বিজেপি। যা মানতে রাজি নন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'বন্দে ভারত আসলে কী? একটা পুরনো ট্রেনকে রং করে দিয়েছে, শুধু ইঞ্জিনটা ছাড়া।'
নিজের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলের অগ্রগতির খতিয়ান তুলে ধরতে মমতা বলেন, 'অনেক পুরনো ট্রেনের রেক এখান থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমার সময় বছরে অন্তত ১০০টা করে নতুন ট্রেন দিতাম আমি। আর গত ১১ বছরে এই একটা ছাড়া রাজ্যের জন্য নতুন কোনও ট্রেন দেওয়া হয়নি। কাজেই বাংলাকে বদমানের যে চেষ্টা তার আমি নিন্দা করি। ফেক নিউজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব।'
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'বন্দ ভারত বর্তমানে ভারতের অভ্যন্তরীণ গতির প্রতীক। বন্দে ভারতে আক্রমণ যারা করছেন তারা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আক্রমণ করছেন। বাংলায় শাসন করছেন দিদি আর বিহারের ক্ষমতায় ভাই তেজস্বী। এটা ভাই-বোনের ব্যাপার। আসলে সবটাই এক। মানুষ সবটাই দেখছেন। মানুষ জাতীয় সম্পত্তি ভাঙার বিরুদ্ধে। কাশ্মীরে পাথর ছোড়া কমছে, আর এখানে বাড়ছে। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।
আরও পড়ুন- বিহার থেকেই পাথর পড়ে বন্দে ভারতে, ‘সত্য’ জেনেই চরম ভাষায় বিজেপিকে কষছে তৃণমূল
'বাংলা নয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দ্বিতীয়বার পাথর ছোঁড়া হয়েছে বিহার থেকেই। ট্রেনে হামলার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে এমনই দাবি রেলের। আর রেলের এই দাবি ঘিরেই বঙ্গ রাজনীতি তেলাপাড়।
এতদিন বন্দে ভারতে হামলা নিয়ে তৃণমূলকেই নিশানা করছিল বিজেপি। 'পরিকল্পিত উস্কানির ষড়যন্ত্র' বলে তোপ দেগেছিল তৃণমূল। তবে এদিনের তথ্য প্রকাশে আসতেই পদ্ম বাহিনীকে তুলোধনা করেতে শুরু করে জোড়াফুল শিবির। 'বাংলার বদনাম করা বিজেপি নেতাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত' বলে মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ। শেষ পর্য্ত এই ইস্যুতে মুখ খুললেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।