রাজ্য সরকারের নিন্দা করেই পাহাড়ের পথে রওনা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। বাগডোগরায় নেমেও সেই রেশ বজায় ছিল। কলকাতা থেকেই জগদীপ ধনকড়কে নিশানা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু, খাড়াই রাস্তা ধরে উঠতেই বদলে গেল ছবি। দার্জিলিংয়ের রাজভবনে এ দিন সাক্ষাৎ হল রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর। ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও। তিন জনের মিলে আলাপ-আলোচনা জারি ছিল প্রায় আড়াই ঘন্টা। রাজ্যপালের আমন্ত্রণেই মুখ্যমন্ত্রী বুধবার রাজভনে গিয়েছিলেন বলে খবর।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ দিনের সাক্ষাৎ নিছকই সৌজন্যমূলক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'রাজ্যপাল পাহাড়ে এসেছেন। আমি আর উনি মাত্রা একমিনিটের ব্যবধানে রয়েছি। সাধারণত আমাদের দু'জনে একই সময় পাহাড়ে আসা হয় না। উনি এসেছেন তাই একবার ঘুরে গেলাম। এক কাপ চা ও একটা বিস্কুট খেয়েছি।'
মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ দিন তাঁর রাজভবনে যাওয়া ছিল সম্পূর্ণ সৌজন্যমূলক। কোনও রাজনৈতিক কথা আলোচনায় উঠে আসেনি। আসন্ন রাষ্ট্রপতি ভোট নিয়েও কোনও কথা হয়নি।
আরও পড়ুন- এবার মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধনে পাহাড়, আপ্লুত মমতা
রাজভনের এ দিনের আলোচনায় ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। যিনি রাজীব গান্ধী মন্ত্রিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতীর্থও ছিলেন। ফলে হিমন্ত-মমতা চেনা-জানা বহুদিনের। কী কথা হল দু'জনের? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'হিমন্তের সঙ্গে দেখা হয়ে ভাল লাগলো। আমি যখন কামাক্ষ্যা গিয়েছিলাম ওরা আমাকে অনের সহায়তা করেছিল। হিমন্ত আজ আমাকে অসমের উত্তরীয় দিয়েছে। আমিও বাংলার উত্তরীয় দিয়েছি। আমি মনে করি, আমাদের সম্পর্ক রাখা উচিত। কারণ, বহু অসমীয়া বাংলায় এবং অনের বাংলার মানুষ ওই অসমে থাকেন। আমাদের সঙ্গে অসমের সীমানাও রয়েছে। ফলে সরকারি তরফে যোগাযোগ রাখা উচিত।'
উল্লেখ্য, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদার থেকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা টাকা নিয়েছিলেন বলে একাধিকবার দাবি করেছে তৃণমূল। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে, জেলবন্দি সুদীপ্ত সেনের চিঠি তুলে ধরে অসমের তৎকালীন মন্ত্রী (বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী) হিমন্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ তুলে ধরেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাঁচাছোলা ভাষায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তোপ দেগে বলেছিলেন, 'বিজেপি করলেই সাত খুন মাফ।'