পঞ্চায়েত ভোটে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগাতে স্বরাষ্ট্র দফতরের পরিকল্পনা ফাঁস করলেন বিরোধী দলনেতা। তৃণমূল যেসব জায়গায় জমি হারিয়ে সেই সব স্পর্শকাতর জেলায় প্রশাসন দ্বিমুখী কৌশল নিচ্ছে। ভোটের সময় বিরোধীদের উপর চাপ তৈরিতেই এই পদক্ষেপ হবে। যা শনিবার প্রকাশ্যে এনেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে এতে বিজেপি দমে যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। শাসক দল ও মমতা প্রশাসনের পরিকল্পনা মোকাবিলায় গেরুয়া দল কীভাবে দান সাজাচ্ছে তাও বাতলেচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শনিবার দীর্ঘ টুইটবার্তা স্বরাষ্ট্র দফতরের পরিকল্পনা ও বিজেপির পাল্টা কৌশলের বিষয়টি নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। টুইটে তিনি লিখেছেন, "আমাদের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করছে যে, পুলিশের পোশাকের মতো ইউনিফর্ম পড়িয়ে স্বরাষ্ট্র দফতর সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুলিশ কর্মী হিসাবে মোতায়েন করার পরিকল্পনা করছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের আন্তর্জেলা আদান-প্রদান করা হবে; বিশেষ করে 'সংবেদনশীল' জেলাগুলিতে - জলপাইগুড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা এবং বীরভূম, যাতে তাদের চিহ্নিত করা না যায়।" তাৎপর্যপূর্ণ হল যে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই টুইটেই নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, প্রশানের এই পদক্ষেপ আসলে দ্বিমুখী উদ্দেশ্যে। যার ব্যাখ্যায় শুভেন্দু লিখেছেন, "ক) বুথ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েনের ঘাটতি যেকোনও উপায়ে রণ করা। খ) 'সংবেদনশীল' জেলাগুলি হল এমন এলাকা যেখানে তৃণমূল ব্যাপকহারে তাদের জমি হারিয়েছে, তাই সেখানে বিরোধীদের যন্ত্রণা দিতে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োজন।"
এরপরই হুঁশিয়ারির ছুড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। দাবি করেছেন যে, "আমরা এবার আমাদের হোমওয়ার্ক খুব ভালোভাবে করেছি। আমাদের ডাটাবেসে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিবরণ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে; যেমন তাদের পরিচয় এবং কোথায় পোস্ট করা হয়েছে। কোনও গড়মিল বা তার চেষ্টা করা হলে যথাযথ প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে। আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করব এবং মাননীয় কলকাতা হাইকোর্টকে জানাব যে কীভাবে তাদের দেওয়া আদেশ প্রশাসনের মারফৎ উপহাস ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।"
সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজের এক্তিয়ার নির্দিষ্ট করে গাইড লাইন তৈরির জন্য এর আগে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরই সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে তা নথিবদ্ধও করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয় যে, কনস্টেবলদের যে সব কাজে ব্যবহার করা হয়, সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করতে পারে সিভিক ভলান্টিয়াররা। একইসঙ্গে ভিড় সামলানো, পার্কিং সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও পুলিশকে সাহায্য করতে পারবে সিভিক পুলিশরা।
সেই অনুসারে পঞ্চায়েত ভোটে কোনওভাবেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগানো সম্ভব নয়। কিন্তু প্রশাসন সেই চেষ্টাই করে চলেছে বলে অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা।
আরও পড়ুন- অভিষেকের গরহাজিরা ইডিতে, নয়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি