নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক চাকরি বাতিল, ঘটনায় মঙ্গলবার খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন আলিপুর আদালতের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না। কালও দু'জন আত্মহত্যা করেছেন। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে সে খাবে কী? এটা রাজনীতির বিষয় নয়। দয়া করে রাজ্যের বদনাম করবেন না।'
Advertisment
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। এসএসসি-র গ্রুপ-ডির পর এবার গ্রু-সি-তেও সদ্য ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরা প্রত্যেকেই কারচুপি করে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলে দাবি। এর আগেও অনিয়ম করে পাওয়া কয়েক হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে রাজ্যজুড়ে। শিক্ষাক্ষেত্রে এরাজ্যে এককথায় সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে একের পর এক চাকরি বাতিলের ঘটনায় এদিন বেশ খানিকটা আবেগপ্রবণ হতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তাঁর কথায়, 'এখন রোজ কথায় কথায় ৩ হাজার চাকরি বাদ, ৪ হাজার চাকরি বাদ। নীচুতলার কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, এটা আমার চিরকালের স্বভাব। তবে কালও দু'জন আত্মহত্যা করেছেন। কেউ ভুল করলে তার দায় তাঁরা নেবেন কেন? হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে সে খাবে কী? যাঁরা অন্যায় করেছে অ্যাকশন নিন। আমার কোনও দয়া নেই তাঁদের জন্য।'
চাকরি বাতিল হওয়া ছেলেমেয়েদর ফের নতুন করে সুযোগ দেওয়ার কথাও এদিন বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, 'ছেলেমেয়েদের সুযোগ দিন। দরকার হলে তাঁদের পরীক্ষা নিন। কোর্ট যেটা বলবে সেটা আমরা করব। দয়া করে চাকরি খাবেন না। এটা আমার মনের ভাবনা। কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না। এটা রাজনীতির বিষয় নয়। অন্য রাজ্যে তো এটা হচ্ছে না। এরাজ্যে কেন হচ্ছে? আমাকে দুবেলা গালাগালি দিন। দরকার হলে মারুন। দয়া করে রাজ্যটার বদনাম করবেন না।'
চাকরি বাতিল ইস্যুতে বামেদেরও এদিন একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'জীবেন জেনেশুনে অন্যায় করি না। ক্ষমতায় এসে একটা সিপিএম ক্যাডারেরও চাকরি খাইনি। তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কাড়ছ কেন?' এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'আইন আনুযায়ী চাকরি দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। আদালতের বিচারপতি, আইনজীবীদের নয়। উনি ভন্ডামি করছেন। ভাবছেন এভাবে বললে দুর্নীতি থেকে মুখ ফেরানো যাবে। মানুষ বোকা নন।'