Coromandel Express accident Updates: সাম্প্রতিক সময়ের সবচেযে বড় রেল দুর্ঘটনা। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৮। আহতের সংখ্যা সাড়ে ছ'শোরও বেশি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এরাজ্যের বহু মানুষ, আহতদের তালিকাতেও বাংলার বহু মানুষের নাম রয়েছে। শুক্রবার রাত পেরিয়ে শনিবার সকালেও উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে।
শনিবার রাতেই সাংসদ দোলা সেনকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কথা বললেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও। এরই ফাঁকে রেল-বাজেট নিয়ে ক্ষোভের কথাও উগরে দিলেন মমতা।
শনিবার হেলিকপ্টারে চেপে বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছোন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখে তিনি কথা বলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''যে যে রাজ্যের মানুষ মারা গিয়েছেন সেই রাজ্যের সরকার মৃতদের পরিবারকে সাহায্য করবেন। আমরাও মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা দেব। ওড়িশা সরকার, রেলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরাও কাজ করছি।'' পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বালেশ্বরে মেদিনীপুর থেকে ওড়িয়া ভাষা জানেন এমন অফিসারদের একটি দলকে বালেশ্বরে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় এদিন কেন্দ্রীয় রেল বাজেট না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ''কিছু একটা ঘটেছে নিশ্চই। ভালো করে তদন্ত করতে হবে। আমি তো শুনছি সংখ্যাটা ৫০০ (সম্ভবত মৃতের সংখ্যা বোঝাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী)। রেলকেই বিশেষভাবে গোটা বিষয়টি দেখতে হবে। এখন তো রেলের বাজেটও হয়না।'' মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথাগুলো বলচেন তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তা শুনছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, এখনও পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, সংখ্যাটা আও বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন- করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা: খোঁজই মিলছে না ছেলেদের, কপাল চাপড়ে ভগবানকে ডাকছে পরিবার!
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তীব্র গতিতে এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই লাইনে আগে চলতে থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ওই ট্রেনের ২৩টি কামরার মধ্যে ১১টিই লাইনচ্যুত হয়। ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। সেই সময় ডাউন লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলির উপর এসে ধাক্কা মারে। ফলে ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসেরও ২টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।
আরও পড়ুন- করমণ্ডল দুর্ঘটনা: চিৎকার-আর্তনাদে দুঃসহ অভিজ্ঞতা! বীভৎস স্মৃতি তাড়া করে বেড়াচ্ছে দুই বন্ধুকে
এরাজ্যের বহু মানুষ দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সওয়ারি ছিলেন। রাজ্যের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, নবান্নের তরফে ওডিশা সরকার এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যে নম্বরগুলি চালু করা হয়েছে সেগুলি হল, 033- 22143526/ 22535185. এছাড়া অন্য হেল্পলাইন নম্বরগুলি হল, হাওড়া ডিভিশনের যাত্রীদের জন্য 033 2638 2217, খড়গপুর ডিভিশনের যাত্রীদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর হল 8972073925/9332392339, বালাসোর ডিভিশনের জন্য হেল্পলাইন নম্বর 8249591559/ 7978418322 এবং শালিমার ডিভিশনের জন্য 9903370746। বিপদগ্রস্ত যাত্রীদের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, যার নম্বর হল 6782262286।
আরও পড়ুন- করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা: কোলের সন্তানদের নিয়ে অথৈ জলে স্ত্রী, শোকে পাথর বাবা-মা