তবে কি এবার বীরভূমের 'বীর' অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট না হলেও ইঙ্গিত কিন্তু একটা রয়েছে। শুক্রবারই বীরভূমের দলের নেতাদের নিয়ে কলকাতার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো। এই বৈঠকেই কেষ্টর ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। বীরভূমে তৃণমূলের মুখ অনুব্রত মণ্ডল এখনও দিল্লির তিহাড়ে বন্দি। গরু পাচার মামলায় মাসের পর মাস ধরে জেলের 'ঘানি' টানছেন অনুব্রত মণ্ডল। একের পর এক মামলায় যেভাবে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ছেন কেষ্ট, তাতে তাঁর আশু জেলমুক্তির সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তবে তৃণমূলনেত্রী এখনও বীরভূমে দলের সভাপতির পদ থেকে কেষ্টকে সরাননি। একাধিক সভা-সমাবেশে অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে বরং তাঁকে সাহসই জুগিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমেরা।
তবে এভাবে আর কতদিন? দিন কয়েক আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে শশী পাঁজা ইঙ্গিত একটা দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূল দলের মহাসচিককে সরিয়ে দিতে পারলে জেলা সভাপতি তো কোন ছাড়! তাঁর ইঙ্গিতটা যে অনুব্রত মণ্ডলের দিকেই ছিল তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রাজনৈতিক মহলের। এবার ওড়িশা থেকে ফিরেই বীরভূমে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী।
আরও পড়ুন- শনিবারই আবহাওয়ার ১৮০ ডিগ্রি ভোলবদল! রইল হাওয়া অফিসের লেটেস্ট আপডেট
এর আগেই অনুব্রতহীন বীরভূমে দলের দায়িত্ব তিনিই সামলাবেন বলে জানিয়েছিলেন। এমনকী জেলায় দল পরিচালনার জন্য ৭ জনের একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ও তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাদের নিয়েই একটি স্টিয়ারিং কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।
যদিও সেই কমিটির মধ্যেও বারবার বিবাদ দেখা গিয়েছে। গরু পাচার মামলায় গত বছরের ১১ অগাস্ট বীরভূমের বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। টানা কয়েক মাস আসানসোল জেলে বন্দি থাকার পর ইডি তাঁকে শোন অ্যারেস্ট করে। আপাতত দিল্লির তিহাড় জেলই ঠিকানা একদা বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের।
বরাবর পাশে থাকলেও গরু পাচার মামলা অভিমুখ যেদিকে এগোচ্ছে তাতে করে অনুব্রতর এখনই জামিন পাওয়া কঠিন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের। তাই শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকের বেশ গুরুত্ব রয়েছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটে তৃণমূলের রণকৌশল কী হবে? যেভাবে শসাকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ময়দান কাঁপাচ্ছে বিরোধীরা, তার মোকাবিলায় পাল্টা কৌশল কী হতে পারে? এসব নিয়েই আলোচনার সম্ভাবনা প্রবল।
আরও পড়ুন- বিরাট ‘দুর্নীতি’! পরীক্ষা না দিয়েই কলেজে চাকরি সুজনের স্ত্রীর? পর্দাফাঁস তৃণমূলের
এরই পাশাপাশি আগামী সময়ে কার নেতৃত্বে এগোবে বীরভূম? সেব্যাপারেও জরুরি আলোচনা সারতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, এই বৈঠকেই অনুব্রত মণ্ডলের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাওয়ারও একটা সম্ভাবনা রয়েছে।