পাহাড়ে গিয়ে অন্য মেজাজে মমতা। রাস্তায় ঘুরলেন, বাচ্চাদের আদর করলেন, কথা বললেন স্থানীয়দের সঙ্গে। বানালেন ফুচকা ও মোমো। বারাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউএসপি জনসংযোগ। এবার দার্জিলিং সফরে এইকাজে তৃণমূল নেত্রী ফুলমার্কস পেয়েছেন। কিন্তু, এগুলো কী নিছকই জনসংযোগ, নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে গভীর কোনও কৌশল? শুরু হয়েছে চর্চা।
পাহাড়ী বাঁকের রাস্তায় থমকে গিয়ে মোমো বা ফুচকা বানানোর মতো ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও মমতা দীঘা, নন্দীগ্রামে চা বানিয়েছিলেন, কখনও বীরভূমে মামুলি ভাতের হোটেলে দাঁড়িয়ে সবজি রান্না করেছেন। কিন্তু, এবার যেটা নতুনত্ব তা হল দার্জিলিং সফরের পরপর দু'দিন একই কাজ করলেন তিনি।
কেন হঠাৎ এত সক্রিয় মুখ্যমন্ত্রী? বিশ্লেষকদের মত, সামনেই রাষ্ট্রপতি ভোট। এই ভোটকে কেন্দ্র করে স্বয়ং মমতাই উদ্যোগী ছিলেন বিরোধী জোট গঠনের। ১৮ দলকে একত্রে আনতেও পেরেছিলেন তিনি। তবে, পদ্ম চালে শেষ পর্যন্ত সব তথৈবচ। আদিবাসী আবেগে ভর করে দ্রৌপদী মুর্মু যে জিতবেন তা রথের দিনই খোলসা করে দিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, 'বিজেপি আগে জানালেন আমরা ভেবে দেখতাম। তবে, দলিত-আদিবাসীরা আমাদের সঙ্গেই আছেন।'
রাষ্ট্রপতি ভোটের সময় যত এগোচ্ছে আদিবাসী প্রীতির কথা বলে বিজেপি ততই তৃণমূলকে আগ্রাসী আক্রমণ করছে। বিজেপি বিরোধী বা জোট নিরপেক্ষ অনেক দলই এখন মুর্মুকে সমর্থনের কতা জানিয়েছে। ফলে, যশবন্ত সিনহার হার নিশ্চিৎ। ফলে, এ দিনে আর কথা বাড়াতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, রাজনৈতিক বিশেষ বক্তব্য নয়, ফল্টে পাহাড়ের ভোট রাজনীতির কথা বিবেচনা করেই জনসংযোগে ব্যস্ত রইলেন মমতা। এবার জিটিএ ভোটে তৃণমূল ১০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে জিতেছে ৫টিতে। সেই ধারাই এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তৃণমূ সুপ্রিমো।
শুধু তাই নয়, জাতীয় প্রতীক বিতর্ক থেকে সংসদে অসংসদীয় শব্দগুচ্ছের ব্যবহার বন্ধ ইস্যুতেও পাহাড় সফরের দ্বিতীয় ও তৃতীয়দিন মুখ খোলেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।