নার্সের সরকারি চাকরি করতে চাওয়ায় ভাড়াটে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে রেণু খাতুনের ডান হাত কেটে নিয়েছে তাঁর স্বামী। তবুও নার্সের সরকারি চাকরির সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেননি রেণু। তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। কয়েক দিন আগেই রেণু নার্সের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে মায়ের আসনে বসান রেণু।
সোমবার বর্ধমানের নবাবহাটের গোদার মাঠে মুখ্যমন্ত্রী আসছেন জেনে তাই সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন রেণু খাতুন। সভাস্থলে তিনি মুখোমুখি হতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলেন, 'জীবনে এগিয়ে যাও। বড় হও। আমরা তোমার পাশে আছি।' সামনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে এমন প্রেরণাদায়ক কথা শুনে আপ্লুত পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামের বধূ রেণু।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় আমি গর্বিত। আজকের দিনটা আমার জীবনে স্পেশাল হয়ে থাকবে।' সোমবার বর্ধমানের নবাবহাট লাগোয়া গোদার মাঠে 'নতুন কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সড়কপথেই বর্ধমানে পৌঁছন।
সভাস্থলে ঢোকার সময়েই রেণু খাতুনের সঙ্গে দেখা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। রেণু মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেন। তখনই রেণুকে বুকে জড়িয়ে ধরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে জীবনে বড় হওয়ার আহ্বান জানান। এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। রেণু পালটা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, 'একহাত না-থাকার অভাব আমি কাউকে বুঝতে দেব না। নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাব।'
আরও পড়ুন- ৬০ বছর হোক অগ্নিবীরদের কাজের মেয়াদ, রে রে করে উঠে তুলোধনা পদ্মের, খতিয়ান পেশ
শুধু রেণুই না। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নারীর ক্ষমতায়নে নানা কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নারীকেন্দ্রিক সমাজের ভাবনাকে মাথায় রেখে তিনি কন্যাশ্রী থেকে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মত বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন। যার সাহায্যে রাজ্যের মহিলাদের শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য এবং আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছে।
রেণু খাতুনের প্রতি তাঁর শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার আর তারপরও এই জেদি মেয়েটির দমে না-যাওয়া স্বভাবতই মন কেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই তিনি রেণুর সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি, সর্বতোভাবে তাঁর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।