পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যেজুড়ে হানাহানির ঘটনা ঘটেছে। গুলি চলেছে, বোমাবাজি হয়েছে । ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। ভোট পরবর্তী সময়ও তার বিরাম নেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই হিংসা, প্রাণহানির ঘটনায় 'দুঃখিত' মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন, এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, নিহতদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল-মত নির্বিশেষে মৃতদের পরিবারগুলোকে আর্থিক সাহায্য ও একজনকে হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সব মৃত্যুই দুঃখজনক। ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমি শুধু নিজের দলের কথা বলছি না। তবে এই ১৯ জনের মধ্যে আমাদের দলেরই ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা সকলেই পরিস্থিতির শিকার। আপনারা দেখবেন যে জায়গাগুলোতে অশান্তি হয়েছে, সেখানে ২০-২৫ বছর ধরে চিরাচরিতভাবে গন্ডগোল হয়ে আসছে। পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড দিচ্ছি, তদন্ত করুন। নিহতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাডা় পরিবারের একজনকে হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি কোনও ভেদাভেদ হবে না।'
ভোটকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধীদের নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, '৬০ হাজারের বেশি বুথে ভোট হয়েছে। তারমধ্যে বড়জোর ৬০টি বুথে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। আমি দুঃখিত রাম-বাম-শ্যাম ও আরও একজন জোট বেঁধেছিল। প্ল্যান করে করেছে ওরা। বিরোধী থাকাকালীন শুধু মার খেয়েছি। বিজেপি ক্ষমতায় আসা থেকে উগ্র বিদ্বেষমূলক মনোভাব দেখিয়েছে। আমি অপরাধ করলে শাস্তি দিন। কিন্তু এত কুৎসা কেন? আমি গরীব পরিবারের সন্তান বলেই কি এরকম? আমার অপরাধ থাকলে শাস্তি দিন, মা-মাটি-মানুষের শাস্তি মাথা পেতে নেব।'
রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, 'আমরা কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে সব মেনেছি। ৭০০ বুথে পুনর্নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন, আমরা তাতেও সায় দিয়েছি। ভোটের বাক্সে জল ঢেলে দিয়ে সাধারণ মানুষের ভোট নষ্ট করা হয়েছে। কমিশন কেন তাঁদের গ্রেফতার করল না? কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও ভাঙড়ে অশান্তি হল? আরাবুল আদতে হারেনি, কিন্তু দেখানো হয়েছে আরাবুল হেরেছে। সব জেনেও তৃণমূল কিছু বলেনি।'
নবান্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা যে, এবারের ২১ জুলাইয়ে সেলিব্রেশন নয়, মৃতদের জন্য, শহিদ পরিবারের জন্য বেলা ১২ টায় শ্রদ্ধা দিবস পালন করা হবে।