বুধবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের বুকে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণীঝড় আমফান। ঝড়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত কলকাতা ও দুই ২৪ পরগণার বিস্তীরণ এলাকা। ঝড়ের মোকাবিলায় বুধবার বিকেল থেকেই তত্পরতা শুরু হয়েছিল নবান্নয়। বিকেল থেকেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা রাত পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে নবান্নে মুখ্যমন্ত্র্রীর সঙ্গে ছিলেন মুখ্য উপদেষ্টা রাজীব সিনহা।
ইতিমধ্যেই সাইক্লোনে বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, সমস্ত এলাকার জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন মমতা। দক্ষিণ ২৪ পরগরণার সুন্দরবন এলাকায় একটি আপদকালীন দল তৈরি করেছে বাংলার সরকার, যাতে ল্যান্ডফলের কারণে ওই এলাকার বাঘ ও অন্যান্য জন্তু বনাঞ্চলের নিকটবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের কাছাকাছি না এসে পড়ে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের সমস্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ অফিসার বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে এমনিতেই পরিস্থিতি জটিল। এমতাবস্থায় উদ্ধারকাজ ও পুর্নবাসস্থান কতটা সম্ভব এখনই বলা কঠিন। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী চিন্তিত এবং উদ্ধারকার্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার বাংলা়র ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে দীঘায় আছড়ে পড়ল সাইক্লোন আমফান। ঝড়ের তাণ্ডব ও ল্যান্ডফলের কারণে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ৪.৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে।
সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন-সহ উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ে আমফান। ল্যান্ডফলের পরবর্তীতে কলকাতা পূর্বদিক এবং উত্তর-উত্তর-পূর্বে গতিমুখ ঘুরে যায় সাইক্লোনের।
রাজ্যে নবান্নের পক্ষ থেকে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে, সেগুলি হল -২২১৪-৩৫২৬, ২২১৪-১৯৯৫। রাজ্যের বিভিন্ন অংশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। জল ঢুকে গিয়েছে বিমানবন্দরের রানওয়েতে ও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হ্যাঙ্গার। বুধবার ঝড়ের তাণ্ডবলীলায় লন্ডভন্ড হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক অঞ্চল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথায়, লক্ষ-কোটি টাকারও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতি সঠিক পরিমাণ বোঝা যাচ্ছে না।। দুই চব্বিশ পরগনার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সর্বোচ্চ। আমফানের ঝাপটায় রীতিমতো বিপর্যস্ত শহর কলকাতা। শহরের প্রায় সব রাস্তাতেই গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। শহরতলির পরিস্থিতিও আশঙ্কাজনক।