তৃণমূলে ফের প্রকট হয়েছে মমতা-অভিষেক দ্বন্দ্ব। আগামী লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা নিয়ে জল্পনা আরও প্রকট। এরই মধ্যে আজ, ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতে পালিত হল রাজ্যের শাসক দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। আর ওই অনুষ্ঠানে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক আরও বেড়েছে। জানালেন, তাঁর ধারণা অভিষেক লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। আর যদি লড়াইয়ের ময়দানে থাকেন তবে লড়াই করবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই।
কী বলেছেন সুব্রত বক্সি?
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের ভাষণে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী আগাী লোকসভায় দলের লড়াই নিয়ে মুখ খোলেন। নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সাফ ঘোষণা করে দেন, মমতার নেতৃত্বেই দিল্লি জয়ের জন্য ঝাঁপাবে দল। সেই প্রেক্ষিতেই সুব্রত বলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সর্বস্তরের ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সাধারণ সম্পাদক। স্বাভাবিক ভাবেই এই নির্বাচনে যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করেন, নিশ্চিত ভাবে আমাদের ধারণা উনি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যদি লড়াই করেন, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে লড়াই করবেন উনি।'
কেন বিতর্ক?
প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব ঘিরে তৃণমূলে মতভেদ রয়েছে। মূলত এই ইস্যুতে একেবারে ভিন্ন মেরুতে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, বয়সজনিত বিতর্ক ছাড়াও সাংগঠনিক নানা বিষয়ে দলের 'সর্বময়ী কর্ত্রী' ও 'সেকেন্ড-ইন-কমান্ডে'র মধ্যে টানাপড়েন রয়েছে। যার দরুন বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দলের কর্মসূচি থেকে কিছুটা দূরে সরে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগেই ঘনিষ্ঠ মহলে অভিষেক জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটে তিনি নিজেকে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সীমাবদ্ধ রাখতে আগ্রহী। এরপরও দলনেত্রী সাংগঠনিকভাবে যে নির্দেশ দিবেন তাই তিনি পালন করবেন। তাহলে কী আগামী লোকসভার লড়াইয়ে তৃণমূলের 'সেনাপতি'কে সামনের সারিতে দেখা যাবে না? এি জল্পনা যখন মধ্যগগনে তখনই দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে অভিষেককে নিয়ে সুব্রত বক্সীর মন্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অভিষেকের পোস্ট-
এদিন অবশ্য সোশাল মিডিয়ায় দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। লিখেছেন, 'নতুন বছরে নব উদ্যমে আগামীর লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন।' কিন্তু তাতে বিতর্ক কমেনি। উল্টে দলের রাজ্য সভাপতির মন্তব্যে সেই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ হয়েছে।
সুব্রত বক্সির মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'রাজ্য সভাপতিকে সম্মান করি। কিন্তু তাঁর বাক্যগঠন নিয়ে আপত্তি রয়েছে। এটা কখনওই কাঙ্খিত নয়। অভিষেক লড়াইয়ের ময়দানেই রয়েছেন। আর তিনি যে কথা বলতে চান, তা শুনলে দলেরই মঙ্গল। এই ধরনের আলটপকা কথা বলে আসলে অভিষেকের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা হয়েছে। যা দলের জন্য মোটেই ভাল সঙ্কেত নয়।'
সুব্রতকে নিশানা কুণালের
সুব্রত বক্সির মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'রাজ্য সভাপতিকে সম্মান করি। কিন্তু তাঁর বাক্যগঠন নিয়ে আপত্তি রয়েছে। এটা কখনওই কাঙ্খিত নয়। অভিষেক লড়াইয়ের ময়দানেই রয়েছেন। আর তিনি যে কথা বলতে চান, তা শুনলে দলেরই মঙ্গল। এই ধরনের আলটপকা কথা বলে আসলে অভিষেকের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা হয়েছে। যা দলের জন্য মোটেই ভাল সঙ্কেত নয়।'