সোমবার বিধানসভায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নানা কথার ফাঁকে সেখানে নিজের পরিবার নিয়ে ফাঁস করলেন বড় খবর।
আগামী বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কার্শিয়াঙের এক তরুণীর বিয়ে। ইতিমধ্যেই সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ দিন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আবেশের বিয়ে নিয়ে দু-চার কথা বলতে শোনা যায় মমতাকে। জানান যে, তাঁর এই ভাইপোর বিয়ের বরকর্তা কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়িতে রয়েছেন বরের জেঠু, কাকু, পিসি। তাহলে কেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম বরকর্তার ভূমিকায়? এই কৌতুহলও নিরসণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, 'আমার পরিবার নেই। তাও বলছি, আমার চিকিৎসক ভাইপোর বিয়ে। কার্শিয়াঙের পাহাড়ি মেয়ের সঙ্গে। সেই বিয়ের বরকর্তা ফিরহাদ হাকিম। আমার ভাইপোর ভিক্ষা মা ওঁর (ফিরহাদ) স্ত্রী।'
আরও পড়ুন- বোঝালেও ‘টিপস’ কানে তোলেনি কংগ্রেস! চটে লাল মমতা
মন্ত্রী ফিরহাদ শুরু থেকেই মমতার অধীনে রাজনীতি করছেন। তৃণমূল সুপ্রিমোর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মন্ত্রীর আসনে আসীন। একাধিক দফতরের ভার সামলেছেন। ২০১৮ সালের শেষ অর্ধ থেকে পেয়েছেন কলকাতার মহানাগরিকে দায়িত্ব। রক্তের না হলেও দলনেত্রীর সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের সম্পর্ক পারিবারিক। চেতলা অগ্রনীর দুর্গা পুজো মেয়রের পুজো বলেই প্রসিদ্ধ। সেই মণ্ডপে প্রতিবছরই চক্ষুদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাইফোঁটায় যাঁরা নিয়মিত 'দিদি'র থেকে ফোঁটা পান সেই তালিকায় রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর এক ভাইপোর ভিক্ষা-মা হয়ে উঠেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী।
আরও পড়ুন- খাড়গের বাড়িতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক, বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার
তা বলে মমতা-ফিরহাদের মাঝে যে কোনও মতপার্থক্য নেই তেমনও নয়। এর আগে কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে মেয়রকে ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় বিষয়েও তাঁকে বাইরে বেশি মুখ না খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিধানসভায় মন্ত্রীদের রেজিস্ট্রার খাতায় সই করে হাজিরার খতিয়ান রেকর্ড রাখার কাজ শুরু হয়েছে। যা মেনে নিতে পারেননি ফিরহাদ হাকিম। প্রকাশ্যেই অসন্তোষ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'আমরা কি স্কুলে পড়ি নাকি? পার্টি বলেছে, তাই সই করলাম । কিন্তু এটার সঙ্গে আমি সহমত নই।'
এসবের মাঝেও মমতা-ফিরহাদের পারিবারিক সম্পর্ক অটুট। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণাতেই তা স্পষ্ট।