চরম আতঙ্ক। বন্দুক হাতে স্কুলে ঢুকে পড়লেন এক ব্যক্তি। এখানেই থামেননি তিনি। ক্লাসঘরে ঢুকেই শিক্ষকের টেবিলের উপর দু’টি অ্যাসিড ভর্তি বোতল রাখেন তিনি। সঙ্গে ছিল বোমাও। বুধবার পুরাতন মালদার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি ত্রাতার ভূমিকায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই যুবককে ধরে ফেলেন। এরপরই ঘটনাস্থলে এসে যায় পুলিশ।
Advertisment
ঘটনা ঠিক কী ঘটেছে?
বুধবার বেলায় পুরাতন মালদার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে আচমকা ব্যাগ কাঁধে এক যুব ঢুকে পড়েন। তাঁর ডান হাতে ছিল পিস্তল আর কাঁধে ব্যাগ। ক্লাস ঘরে ঢুকেই ব্যাগ থেকে দুটি মুখবন্ধ বোতল শিক্ষকদের টেবিলের উপর রাখেন তিনি। পড়ুয়াদেরও ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখেন। বন্দুক দেখেই ভয় পেয়ে যায় পড়ুয়ারা। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে তারা। দাবি করেন ওই বোতলে অ্যাসিড রয়েছে। সঙ্গে মজুত আছে বোমাও।
কী কারণে ওই ব্যক্তি এমন কাণ্ড ঘটালেন?
Advertisment
স্থানীয়দের দাবি বন্দুক হাতে ওই ব্যক্তির নাম রাজু বল্লভ। এলাকার অনেকে দাবি রাজু মানসিক ভারসাম্যহীন। বন্দুর হাতে এদিন রাজু দাবি করেছেন যে, তাঁর স্ত্রী ও পুত্র হারিয়ে গিয়েছে। নবান্ন সহ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাই এই পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
বন্দুক উঁচিয়ে কথা বলার সময়ই হঠাৎই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। ফলে মাটিতে পড়ে যায় সে। ততক্ষণে এসে যায় পুলিশও। রাজু বল্লভকে আটক করে স্কুলের বাইরে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের রাজুকে আটক করে। সেই সময় তাঁর কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্এধার হয়। এরপরই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলের এক শিক্ষক দেবাশীষ শীল বলেন, 'আমরা ভাবতে পারছি না যে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। কেবলমাত্র প্রথম পিরিয়ডের ক্লাস শুরু হয়েছিল সেই সময় স্কুলের একটি ছোট্ট গেট খোলা ছিল। পিঠে ব্যাগ নিয়েই ওই ব্যক্তিকে ঢুকতে দেখি। এরপরই সে সপ্তম শ্রেণীর একটি ক্লাসে ঢুকে পড়ে। সেখানে তখন একজন শিক্ষিকা ক্লাস নিচ্ছিলেন। তারপরেই দেখি যে বন্দুক বার করে এবং হাতে বোমা নিয়েই তাণ্ডব শুরু করে দেয় ওই আততায়ী। তখনই আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি। অবশ্যই এমন ঘটনায় প্রত্যেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।'
হাড়হিম করা এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্কুলের নিরাপত্তা। কোথা থেকে রাজু বন্দুক জোগাড় করলেন, এই ঘটনমার নেপথ্যে রাজুর দাবি কতটা সত্যি তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেছেন, 'একটা পারিবারিক সমস্যা রয়েছে ধৃত ওই ব্যক্তির। কিন্তু তা বলে স্কুলে ঢুকে এমন কাণ্ড ঘটাবে সেটা কেউ ভাবতেই পারেনি। ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র , রাসায়নিক বস্তু উদ্ধার হয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই বিষয়টি সম্পর্কে বলা যাবে। তবে অভিযুক্ত রাজু বল্লভ নামেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মানসিক অবস্থা সম্পর্কেও এখনই কিছু পরিষ্কারভাবে বলা যাচ্ছে না। সমস্ত বিষয়টাই তদন্ত সাপেক্ষ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।'