Advertisment

আমের ফলন নজরকাড়া, তবু লাভ যেন দুরাশা! মাথায় হাত মালদার চাষী-ব্যবসায়ীদের

কী কারণে এই অবস্থা?

author-image
Rajit Das
New Update
mango farmers and traders of malda are facing losses due to extreme heat , আমের ফলন নজরকাড়া, তবু লাভ যেন দুরাশা! মাথায় হাত মালদার চাষী-ব্যবসায়ীদের

গাছ থেকে আম আগেভাগেই পেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

একটানা তীব্র দাবদাহ আর ভ্যাপসা গরমে মাথায় হাত মালদার আম চাষীদের। গত এক সপ্তাহ ধরে মালদায় তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। এই গরম আরও বেশ কয়েকদিন বজায় থাকবে বলে পূর্বভাস। এই প্রচণ্ড গরমে গাছের আম পেকে একেবারে শেষ। বাঁশ ও নেট দিয়ে তৈরি টুসি দিয়ে আম পাড়তে গিয়েই চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। তাঁদের বক্তব্য, আম এত স্পর্শকাতর ফল যে একটু জোরে বাড়ি লাগলেই তাতে পচন ধরে যায়। কিন্তু এত গরমের মধ্যে গাছের আম পেকে দলদলে হয়ে পড়েছে। টুসি দিয়ে আম পারা যাচ্ছে না।

Advertisment

এই অবস্থায় যে সংখ্যক কাঁচা আম রয়েছে, তাও তড়িঘড়ি পারতে শুরু করে দিয়েছেন আম চাষীরা। ইতিমধ্যে গোপালভোগ , লক্ষণভোগ, হিমসাগর, আম্রপলি সহ গুটিজাতের আম পেড়ে বাগানে মজুত করছেন চাষী এবং মালিকেরা। কিন্তু বাইরের রফতানির ক্ষেত্রে এখন বিপাকে পড়েছেন বাগান মালিকরা। তাঁদের বক্তব্য, এত পাকা আম বাইরে রফতানি কোনমতেই সম্ভব নয়। গরমে সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এরকম তীব্র দাবদহ আরও পাঁচ থেকে সাত দিন চলার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাতেই মাথায় হাত পড়েছে মালদা আম চাষীদের।

জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই এবারে মালদায় বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদনের আশঙ্কা করা হয়েছে। কারণ, এবছর প্রথম থেকেই তুলনামূলক কালবৈশাখী ঝড় কম হয়েছে। শিলাবৃষ্টি হয়নি। ফলে আম উৎপাদনের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যাও দেখা যায়নি। কিন্তু এখন গত এক সপ্তাহ ধরে যেভাবে দাবদাহ শুরু হয়েছে , তাতে গাছের আম গোড়াতেই পেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে চাষীদের আম পারার ক্ষেত্রে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। যদিও জুন মাসের প্রথম থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ আম্রপলি, হিমসাগর, লক্ষণভোগ , গোপালভোগ, জিলাপিগারা, গুটি সহ একাধিক জাতের আম পাড়ার কাজ শেষ করে ফেলেন চাষীরা। কিন্তু এবার ফলন বেশি। ফলে গাছে এখনও আম রয়েছে। আর অধিক ফলনেই সমস্যা তুঙ্গে।

পুরাতন মালদার এক আম চাষী শ্রীপতি মন্ডল বলেছেন, 'গাছ থেকে আম পাড়ার মুহূর্তে এত গরম পরবে আমরা ভাবতেই পারিনি। অতিরিক্ত ভাবে গাছের আম পেকে ঝরতে শুরু করেছে। তাই তড়িঘড়ি এখন আম পারছি। যেসব আম এখন পাড়ার সময় হয়নি সেগুলো পেরে নিতে হচ্ছে। কারণ, অতিরিক্ত গরমে ব্যাপকভাবে গাছে আম পেকে নষ্ট হচ্ছে। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। এবছর আমের দাম অনেকটাই কমে গিয়েছে। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মন হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। তাও পাইকারদের ঠিকমতো দেখা মিলছে না। বাইরে রফতানির ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ এত পাকা আম রফতানি করার সময় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে যতটা প্রথম থেকে আম চাষে লাভের আশঙ্কা করা হয়েছিল তা বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে সব জলে।'

মালদা, ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেছেন, 'গত এক সপ্তাহ ধরে রাজ্য জুড়ে দাবদাহ চলছে। সুতরাং মালদার আম চাষীদের হঠাৎ করে এরকম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে তা ভাবাই যায়নি । গাছে বিপুলভাবে আম পাকতে শুরু করেছে। টুসি দিয়ে আমপাড়ার কাজ করেন চাষিরা। কিন্তু তাতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।'

Malda Maldah Heat Wave mango
Advertisment