প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত নদিয়ার পলাশিপাড়ার এই তৃণমূল বিধায়ককে রাতভর জিজ্ঞাসা করেন ইডি কর্তারা। কিন্তু, সিজিও কমপ্লেক্সের সাততলায় ইডি-র অফিসারদের নানা প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর বিভিন্ন উত্তরে অসঙ্গতিও পান ইডিকর্তারা। তারপরই রাত ১টা নাগাদ মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তাঁকে পেশ করা হয় ব্যাংকশাল কোর্টে।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। মানিক ভট্টাচার্যকে আদালত চত্বরে দেখেই উত্তেজনা ছড়ায়। জুতো হাতে বিজেপি কর্মীরা তোলেন 'চোর চোর' স্লোগান। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, ‘জুতোটা মারতে পারা গেল না এটাই হতাশার। তবে, মানুষ ওনাদের জুতো মারবে। আর চোরকে চোর ছাড়া অন্য কিছু তো বলা যায় না। ওনার জন্য রাজ্যের যুবক, যুবতীদের পথে বসতে হচ্ছে। এদের ছেড়ে দেওয়া যায় না।’
উপস্থিত ছিলেন বিজেপির আইনজীবী নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালও। তাঁর কথায়, ‘যার জন্য আজ বাংলার কয়েকশো ছেলে-মেয়ে পথে বসে আছে, সেই চোরকে সরকার সুরক্ষা দিতে আদালতে বাড়তি পুলিশ পাঠিয়েছে। আর, বিজেপির হয়ে আন্দোলন করায় হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলায় জেলে ভরে রেখেছে পুলিশ। তাই এই বিক্ষোভ।’
আরও পড়ুন- মানিকের গ্রেফতার নয়, একটাই দাবি নিয়োগপত্র, অবস্থানে ২০০৯ প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণরা
তদন্তকারীদের অভিযোগ, শুধু মানিকই আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত নন। তাঁর ছেলের অ্যাকাউন্টেও মিলেছে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার হদিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০১৮ সালে বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের কনসালটেন্সি সার্ভিস সংস্থার চুক্তি হয়েছিল। মোট ৫৩০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু, এরপর চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোনওরকম পরিষেবা তাঁর সংস্থা দেয়নি।
শুধু ছেলেই নয়, তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন যে, মানিক ভট্টাচার্যের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অ্যাকাউন্টেও বিপুল আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গেও জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন মানিক ভট্টাচার্যের পরিবারের সদস্যরা।