অনুপম সিং হত্যা মামলায় সাজা শোনাল আদালত। অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদার ও স্ত্রীর প্রেমিক অজিতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাসত আদালত। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২৩ মাস পর এ মামলায় সাজা ঘোষণা করল আদালত। বারাসত আদালতের রায় শোনার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুপমের মা-বাবা। ফাঁসির নির্দেশ না দেওয়ায় কার্যত হতাশ অনুপমের বাবা-মা। অনুপমের মা বলেন, ‘‘সুবিচার পাইনি। হাইকোর্টে যাব’’। অনুপমের বাবা বলেন, ‘‘বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছে’’। বৃহস্পতিবারই এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদার এবং মনুয়ার প্রেমিক অজিত রায়কে। এদিন সকাল থেকেই বারাসত আদালতে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে ফেরার প্রশ্নই নেই, ভাল লোকেরাই দল ছাড়ছে: বৈশাখী
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ মে উত্তর ২৪ পরগণার হৃদয়পুরে ভ্রমণ সংস্থার কর্মী অনুপম সিংহকে খুন করা হয়। পরের দিন নিজের বাড়ি থেকেই দেহ উদ্ধার হয় অনুপমের। প্রথমে খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পড়ে পুলিশ। পরে ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পান তদন্তকারীরা। অনুপমের স্ত্রী মনুয়াই খুনে জড়িত বলে জানতে পারে পুলিশ। এরপরই মনুয়ার কললিস্ট দেখে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পায় পুলিশ – বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে খুন করিয়েছে মনুয়া মজুমদার। ঘটনার ১৩ দিনের মাথায় মনুয়ার প্রেমিক অজিতকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিরোধী বুদ্ধিজীবীদের দুষে মোদীকে ফের চিঠি বিশিষ্টদের
এ ঘটনায় রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় রাজ্যে। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, অজিতের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল মনুয়ার। প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার জন্যই স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরানোর ছক কষে সে। প্রেমিকার প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল অজিতও। তাই মনুয়ার কথাতেই অনুপমকে সরানোর দায়িত্ব নেয় অজিত। মাথার পিছনে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে অনুপমকে খুন করা হয়। যে সময় অজিত খুন করে অনুপমকে, সেসময় অজিতের ফোনের ওপারে ছিল মনুয়া। ফোনে মনুয়া স্বামীর মর্মান্তিক আর্তনাদ শোনে। এই ঘটনার পর কয়েকদিন কান্নাকাটি করে রীতিমতো অভিনয় করে মনুয়া। কিন্তু পুলিশি তদন্তে শেষ পর্যন্ত মনুয়ার অভিনয় ধরা পড়ে যায়। অনুপম হত্যাকাণ্ডে ৩১ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ নেওয়া হয়। ১৮৬ দিনের মাথায় এ ঘটনায় চার্জশিট পেশ করা হয়।