Advertisment

মিজোরামের ব্রিজ দুর্ঘটনার পরই মালদায় হাহাকার, ইংরেজবাজারের গ্রামে গ্রামে কান্নার রোল

মৃত এবং নিখোঁজ বহু শ্রমিকের বাড়ি মালদার বিভিন্ন এলাকায়।

IE Bangla Web Desk এবং Rajit Das
New Update
Many of the laborers who died in Mizorams bridge accident were residents of Malda , মিজোরামের ব্রিজ দুর্ঘটনার নিহত বহু শ্রমিক মালদার বাসিন্দা

মালদার পুখুরিয়া এলাকায় মৃত শ্রমিকের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে।

মিজোরামে নির্মীয়মান রেল ব্রিজ ভাঙার পর হাহাকার মালদায়। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মালদার অনেক শ্রমিকের। জেলা প্রশাসনের সূত্রে খবর, এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এখনো নির্মীয়মান ভেঙে পড়া ব্রিজের তলায় অনেক শ্রমিকের দেহ চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা। ফলে নিখোঁজ রয়েছে অনেক শ্রমিক। মৃত এবং নিখোঁজ থাকা বহু শ্রমিকের বাড়ি মালদার বিভিন্ন এলাকায়। বুধবার সকাল দশটা নাগাদ মিজোরামে এই দুর্ঘটনার পর দুপুর বারোটায় সেই শোক সংবাদ মালদার বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। ইতিমধ্যে মালদা জেলা প্রশাসন মৃত এবং মিজোরামে কাজ করতে যাওয়া সেইসব শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনার ব্যাপারে টুইট করে  দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisment

মালদার জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় কতজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন, সে ব্যাপারে পরিষ্কার কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে মিজোরামের যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।  তাদের কাছ থেকে বিশদ তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ, প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল দশটা নাগাদ মিজোরামে আইজল শহর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে নির্মীয়মান একটি রেল ব্রিজ আচমকায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ওই রেলব্রিজের উচ্চতা কলকাতার শহীদ মিনারের থেকেও অনেক বেশি। তাতেই অনেক উঁচু থেকে নীচে রেল ব্রিজে নির্মীয়মান সামগ্রী ভেঙ্গে পড়ায় অসংখ্য শ্রমিকের মৃত্যুর হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি সূত্র অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৫ জন। এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। মৃতেরা প্রত্যেকেই মালদা জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েত, বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। পাশাপাশি মালদার  চাঁচল মহকুমার রতুয়া ২ ব্লকের পুকুরিয়া থানার অন্তর্গত কাতলামারি এলাকার বাসিন্দা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মিজোরামের ওই নির্মীয়মান রেল ব্রিজে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশ শ্রমিকের বাড়ি মালদায়। এরা গত দু'মাস আগে মিজোরামে গিয়েছেন কাজের জন্য। ইতিমধ্যে মালদা জেলা প্রশাসন মিজোরাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।

পুখুরিয়া থানার অন্তর্গত কাতলামারী এলাকার বাসিন্দা মৃত শ্রমিক সারিকুল শেখের (২৭) এক আত্মীয় এমাদুল শেখ বলেন, 'দু'মাস আগেই আমার ভাই মিজোরামে কাজ করতে গিয়েছিল। এদিন সকালে মোবাইলে খবর আসে দুর্ঘটনায় ওর সঙ্গে আরও অনেকেই মারা গিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর মৃতদের নিথর দেহের ছবি মোবাইলে তুলে পাঠিয়েছে মিজোরাম থেকে। একইভাবে পুখুরিয়া থানা এলাকা থেকে মিজোরামে কমপক্ষে ৩০ জন শ্রমিক কাজ করতে গিয়েছিলেন। এছাড়াও ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা ও বিনোদপুর থেকে অনেক শ্রমিক গিয়েছেন কাজ করতে। দুর্ঘটনার পর এখনও অনেকের দেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এত বড় দুর্ঘটনা কিভাবে ঘটলো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা চাই রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকার মৃতদের পরিবারের পাশে থেকে সহযোগিতা করুক।'

প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা এবং বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ১০ জন শ্রমিক মিজোরামে গিয়েছিলেন কাজ করতে। পুখুরিয়া থানার অন্তর্গত কাতলামারী সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার অন্তত ৩০ জন শ্রমিক কাজ করতে গিয়েছেন। এখনো পর্যন্ত কতজন শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে তা পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না।

অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেছেন, 'মিজোরামের দুর্ঘটনার পর মালদার মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমবেদনা জানিয়েছি। রাজ্য প্রশাসন মৃত এবং আহত শ্রমিকদের পরিবারের পাশে রয়েছে । তাদের সবরকম ভাবে সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।ট

Malda Mizoram Maldah
Advertisment