পূর্ব মেদিনীপুরে জোড়াফুলে ভাঙন। তৃণমূল ছেড়ে কয়েকশো কর্মী-সমর্থকের যোগ সিপিএমে। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাম শিবিরে যুক্ত কয়েকশো মানুষ। এগরা ২ নং ব্লকের বাথুয়াড়িতে সভা করে দলে যোগ দেওয়া ওই কর্মী-সমর্থকদের হাতে লাল পতাকা তুলে দেন বাম নেতৃত্ব।
বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে একেবারেই স্বস্তিতে নেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়াচ্ছে দলের নেতা-মন্ত্রীদের। এসএসসি দুর্নীতিতে জেলে রেয়েছেন একদা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গরু পাচার মামলায় সিবিআই জালে অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতা। আরও বেশ কয়েকজন নেতার নামও দুর্নীতি মামলায় সিবিআই ও ইডি-র স্ক্যানারে রয়েছে বলে গুঞ্জন তুঙ্গে।
ঠিক এই পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোলের একটা মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল। শহর কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে প্রথমে ব্যানার লাগানো হয়েছিল। '৬ মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূল আসছে' বলে ব্যানারে ফলাও করে লেখা ছাপা হয়েছে। ঠিক তার কয়েকদিনের মাথায় শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া আরও একটি ব্যানারে ছেয়ে যায় তিলোত্তমা মহানগরী।
সেই ব্যানারে লেখা হয়েছে, ''CBI-এর ভয় দেখিয়ে মমতাকে রোখা যাবে না।'' অর্থাৎ একের পর এক দুর্নীতিতে নেতাদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় দলের ভাবমূর্তি রক্ষা নিয়ে বড়সড় চিন্তায় পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ১১ বছর ধরে রাজ্যে সরকার চালিয়ে আসা দলের নামে এমন ব্যানার পড়ায় সেই তত্ত্বই সামনে আনছেন রাজনৈতিক বিশ্লষকদের একটি বড় অংশ। বিরোধীরা অবশ্য মমতা-অভিষেকের ছবি দিয়ে লাগানো এমন ব্যানার নিয়ে টিপ্পনি কাটতে শুরু করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ‘আর ছাড় নয়, পঞ্চায়েতে অনিয়ম দেখলেই FIR’, জেলায়-জেলায় কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
ঠিক এই আবহে জেলাস্তরে দলের ভাঙন অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে জোড়াফুলের, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক যোগ দিয়েছেন সিপিএমে। দলে আসা নবাগত কর্মী-সমর্থকদের হাতে লাল পতাকা তুলে দেন সিপিএমের এগরা ২ নং ব্লকের বালিঘাই এরিয়া কমিটির সদস্য নাসের হোসেন বেগ।
তিনি জানিয়েছেন, বাথুয়াড়ি ও বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতের কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সিপিএমে যোগ দিয়েছেন। আগামী দিনে এগরায় আরও বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী সিপিএমে যোগ দেবেন বলে আশাবাদী তিনি। এব্যাপারে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ''ঘটনাটি আমার বিধানসভা এলাকার নয়। বিষয়টি আমার জানাও নেই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।''