দেওচা-পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লাখনি গড়া নিয়ে আদিবাসীদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াল মাওবাদীরা। হরিণসিংহা গ্রামের দেওয়ালে পোষ্টার সাঁটিয়ে আদিবাসীদের আন্দোলনকে সমর্থন কথা জানিয়েছে মাওবাদী সংগঠন। এই পোষ্টারকে কেন্দ্র করেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বীরভূমের মহম্মদবাজার থানা এলাকায় দেওচা-পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লাখনি চালুর বিষয়ে সরকারের প্যাকেজ ঘোষণার পরেই শুরু হয়েছে আদিবাসী আন্দোলন। সেই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছে সেভ ডেমোক্রেসি সহ একাধিক রাজনৈতিক সংগঠন। এর পাল্টা দিন দু'য়েক আগে হাতে ব্যানার ছাড়াই গ্রামে মিছিল করেছিল তৃণমূল। মহিলারা হাতে ঝাঁটা, লাঠিসোঁটা নিয়ে সেই মিছিল রুখে দিয়েছিল। কয়েকজন তৃণমূল কর্মী সমর্থককে হেনস্থাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূলের মিছিলে হামলা চালানোর অপরাধে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ রাতে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। পুলিশে মারে ২০ জনেরও বেশি মহিলা আহত হন বলে দাবি আন্দোলনকারী গ্রামবাসীদের।। তাদের মল্লারপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে।
এরপরেই শনিবার মাওবাদী পোষ্টার মেলে হরিণসিংহা গ্রামে। সাদা কাগজে লালাকালিতে হিন্দিতে লেখা ‘হাম লোগ আপ কে সাথ হ্যায়।' পোস্টারে বক্তব্যের নীচে লেখা 'সিপিআই (মাওবাদী)'। এপ্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেছেন, 'আমরা তদন্ত করছি। তবে ওই পোষ্টার সাঁটানোর পিছনে স্থানীয়দের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আমরা ঝাড়খণ্ডের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। খুব তাড়াতাড়ি আমরা পোষ্টারের রহস্য উদ্ঘাটন করব।'
আদিবাসী নেতা সুনীল মুর্মুর দাবি, 'আমাদের জনজাতি আদিবাসী ভূমিরক্ষা কমিটি ওই পোষ্টারকে সমর্থন করে না। কারা ওই পোষ্টার মেরেছে আমরা বলতে পারব না। আমাদের মনে হচ্ছে এই সমস্ত পোষ্টার মেরে শাসক দল রাজনৈতিক চক্রান্ত করে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে রুখে দিতে চাইছে। আমরা কোন প্ররোচনায় পা দেব না। আমরা কয়লাখনি চাই না। মাতৃভূমি ছাড়ব না। যতই মামলা দেওয়া হোক কিংবা পুলিশ দিয়ে মারধর করা হোক, আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।'
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ওই জায়গা আদিবাসী অধ্যুষিত। তাই পড়শি রাজ্যে ঝাড়খণ্ডের কেউ ঘোলা জলে মাছ ধরতে ওই পোষ্টার সাঁটিয়েছে। মাওবাদীর কোন গল্প নেই। আমরা ওই পোষ্টারকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।'