Advertisment

আটকে ১৭টি পণ্যবাহী জাহাজ, বিপাকে হলদিয়া বন্দর

বন্দরের পণ্য পরিবহণ ও খালাসের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হলদিয়ায় আসার জন্য স্যান্ডহেডে ২৮ টি জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। খবর পেয়ে বেশ কিছু জাহাজ পারাদ্বীপের দিকে ঘুরে গিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দু’দিন ধরে জাহাজ বাঁধার মেরিন হ্যান্ড কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে অচল হয়ে পড়ল হলদিয়া বন্দর। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধে ছ'টা থেকে শুরু হওয়া একটানা কর্মবিরতির জেরে ১৭ টি জাহাজ বন্দরে ঢুকতে বা বেরোতে পারেনি। বন্দরের পণ্য পরিবহণ ও খালাসের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হলদিয়ায় আসার জন্য স্যান্ডহেডে ২৮ টি জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। হলদিয়ার কর্মবিরতির খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জাহাজ পারাদ্বীপ ও ধামড়া বন্দরে চলে গিয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি।

Advertisment

মেরিন হ্যান্ড কর্মীদের কর্মবিরতিতে ক্ষুব্ধ বন্দর কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের দাবি, জাহাজ বাঁধার কাজে বন্দরে মেরিন হ্যান্ড কর্মী কম রয়েছেন। নতুন করে কর্মী নিয়োগ না হলে কাজে সমস্যা হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। এই ঘটনায় কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তাঁরা।

বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধে ছ'টা নাগাদ লকগেটে এলাকার ১১ জন মেরিন হ্যান্ড কর্মী এই কর্মবিরতি শুরু করেন। ওই সময় ‘ক্যাপিটান মাসলোভ’ নামে একটি কন্টেনারবাহী জাহাজ লকগেট দিয়ে বেরচ্ছিল। খাদ্যদ্রব্য সহ বিভিন্ন সামগ্রী বোঝাই জাহাজটি সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, মেরিন হ্যান্ড কর্মীরা ওই জাহাজটিকে লকগেট থেকে ফিরিয়ে দেন। ফলে জাহাজটি ফের বার্থে ফিরে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

শুধু এই জাহাজটি নয়, এরকম আরও ছ'টি পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরের বিভিন্ন বার্থে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, বন্দরের বাইরে থার্মাল কোল, ভোজ্যতেল কারখানার কাঁচামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলি জাহাজ। বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দরে জাহাজ ঢুকতে না পারায় হলদিয়া শিল্পাঞ্চল সহ রাজ্যের বিভিন্ন কারখানা সমস্যায় পড়েছে।

মেরিন হ্যান্ড কর্মীদের দাবি, হলদিয়া বন্দরে দীর্ঘদিন কোন নিয়োগ হয়নি। ফলে বিভিন্ন বিভাগে কর্মী সংকট রয়েছে। জাহাজে দড়ি বাঁধার কর্মীরও অভাব রয়েছে। বন্দরের সিটু নেতা বিমান মিস্ত্রি বলেন, "হলদিয়ায় নতুন করে দীর্ঘদিন স্থায়ী পদে কোন নিয়োগ হয়নি। বন্দর কর্তৃপক্ষ আউটসোর্সিং করে কাজ চালান। গত ডিসেম্বরে পোর্ট ট্রাস্টের ট্রাস্টি মিটিংয়ে আমরা নতুন করে কর্মী নিয়োগের দাবি জানিয়েছি।"

তবে বন্দরের বিএমএস সংগঠনের সম্পাদক প্রদীপ বিজলী বলেন, "সমস্যা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছু কর্মী নৈরাজ্য চালাতেই এই কাজ করছেন। এটা জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজ এবং রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।"

বন্দরের মেরিন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার স্বপন সাহারায় বলেন, "ওই মেরিন হ্যান্ড কর্মীদের দাবি অন্যায্য। ওঁদের কর্মবিরতির ফলে দুদিনে বন্দরের বড়সড় ক্ষতি হয়েছে। ওঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১১ জন মেরিন হ্যান্ড কর্মীকে কাজে যোগ না দেওয়ার জন্য নোটিশ ধরানো হয়েছে।"

বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দরে সব মিলিয়ে অতিরিক্ত মেরিন হ্যান্ড কর্মী রয়েছেন। যেখানে ৭০ জন কর্মী দরকার, সেখানে রয়েছেন ১১২ জন কর্মী। জাহাজ বাঁধার জন্য ওঁদের মাসিক বেতন দেড় লক্ষ টাকার মতো। সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়।" কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, প্রায়ই মেরিন হ্যান্ড কর্মীরা কাজে সময় "ঘুমোন"। রবিবারও ডিউটির সময় লকগেটের কর্মস্থলে সমস্ত মেরিন হ্যান্ড কর্মীকে পাওয়া যায়নি।

government of west bengal
Advertisment