'গ্রামীণ অর্থনীতিই ভবিষ্যতে বাংলায় জিওনকাঠি হতে চলেছে।' তাই একদিকে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, অন্যদিকে ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মাটির সৃষ্টি প্রকল্পের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা আবহে জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের সঙ্গে বুধবার বৈঠকে বসেছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই দৃঢ় গ্রামীণ অর্থনীতির রূপরেখা স্থির করেন মুখ্যমন্ত্রী। গরিবদের কর্মসংস্থানে বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান– এই ছ’টি জেলায় উদ্যানপালন, পশুপালন, মৎস চাষ প্রভৃতির মাধ্যমে রূপায়ন হবে মাটির সৃষ্টি প্রকল্প। এছাড়া, একশ দিনের কাজে বাংলায় ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ৫০ হাজার একর জমি মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে কাজে লাগানো হবে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন এ রাজ্যে ফেরত প্রায় আড়াই লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'এই প্রকল্প জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে রূপায়িত হবে।'
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিবৃতি অনুসারে, গরিব কৃষকদের থেকে পতিত ১০-২০ একর জমি রাজ্য নেবে। এক সঙ্গে রাজ্য বিনামূল্যে বেশ কিছু জমি যুক্ত করবে। জমিদাতারা কৃষক সমবায় তৈরি করবে, আর্থিক সহায়তার জন্য সেই জমি সমবায় ব্য়াঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এই সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী, মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোনও ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে স্থানীয় মানুষদের নিয়েই কাজ করা হবে। মমতার দাবি, গ্রাম বাংলার গরিব মানুষকে আর্থিকভাবে চাঙ্গা করবে এই প্রকল্প।
আরও পড়ুন- ২০ লক্ষ কোটির পাল্টা মমতার দূরন্ত বৈপ্লবিক কর্মসূচি!
একশ দিনের কাজে গতি বৃদ্ধিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পুকুর খনন, মৎস চাষ, উলম্ব উদ্যান, রান্নার কাজ, বীজ তৈরি, নির্মাণ কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে।
তবে, একশ দিনে কজে অতীতে বেশ কয়েকবার বাংলা জাতীয়স্তরে ভাল করলেও গত বছররের বরাদ্দকৃত অর্থের সম্পূর্ণ টাকা এখনও মেলেনি। আপাতত আর্থিক সংকটে তাই গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে কালো মেঘ হয়ে দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা। করোনার পর মনরেগায় এবার আদৌ কত টাকা শেষ পর্যন্ত মিলবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বাংলা আবাস যোজনায় ১০ লক্ষ বাড়ির কাজ হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই কাজে আগ্রাধিকার পাবেন ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকরা।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন