পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় গিয়ে তাণ্ডব ইঞ্জিনিয়ার ছেলের। মাদ্রাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে যুবক। পরে স্থানীয়রা কোনওভাবে তাকে পাকড়াও করে বেধড়ক মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়ানোর দাবিতে বনগাঁ থানাতেও চলে পাল্টা ভাঙচুর-তাণ্ডব। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ক্ষুব্ধ জনতার থানায় হামলার জেরে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
গতকাল রাতে তুমুল চঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বনগাঁর মতিগঞ্জ এলাকায়। সেখানকার একটি মাদ্রাসায় আচমকা ঢুকে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থেকে পালিয়ে আসা যুবক হুমায়ুন কবীর। আচমকাই ওই মাদ্রাসায় ঢুকে ছুরি চালাতে থাকে অভিযুক্ত যুবক। ছুরির কোপে বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। এরপরই স্থানীয়রা তাকে ধাওয়া করলে পালাতে চেষ্টা করে হুমায়ুন। তাকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু হয়।
খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায় এবং তাকে আটক করে। পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, "হামলাকারী ওই যুবকের নাম হুমায়ুন কবীর। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা। মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে বনগাঁয় চলে এসেছিল। সন্ধ্যায় বনগাঁ খান শরিফে ছুরি নিয়ে ও হামলা চালিয়েছিল। ছুরির আঘাতে চারজন আহত হয়েছে।"
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Update:ট্যাংরা কাণ্ডের ছায়া! ঋণের দায়ে চরম সিদ্ধান্ত গৃহকর্তার, পরপর মৃত্যুতে হাহাকার!
এদিকে গতকাল রাতে, ওই যুবক মাদ্রাসায় হামলা চালানোর পরেই তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বনগাঁ-বাগদা রোডে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। বনগাঁ থানার সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করে একদল জনতা। অভিযুক্ত যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তাকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে চলে বিক্ষোভ। এরই মধ্যে একদল যুবক থানায় চড়াও হয়ে রীতিমতো ভাঙচুর শুরু করে দেয়। বিক্ষোভকারীদের হামলার জেরে কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে শেষমেষ লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- Deportation: প্রাক্তন সরকারি শিক্ষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ, বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগ
পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা চালানোর ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে মেমারির বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর মানসিক অবসাদগ্রস্ত বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ুনের বছর কয়েক আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। সেই ঘটনার পর থেকেই সে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। অবসাদগ্রস্ত হয়েই এর আগে মেমারিতে তার নিজের বাবা-মাকেও সে নৃশংসভাবে খুন করেছে।