scorecardresearch

রাতারাতি মিড ডে মিলের নুন-ভাত বদলে গেল ডিম-ভাতে

“খুব শীঘ্রই সমস্ত স্কুলের রান্না ঘরে সিসি টিভি বসানো হবে যাতে মিড ডে মিল ‘মনিটরিং’ করা যায়। আগামী কাল জেলার ১০০০টি স্কুলে আমাদের প্রশাসনিক টিম পরিদর্শন করবে।”

education
হুগলীর চুঁচূড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে মঙ্গলবার মিড ডে মিলে ডিম-ভাত দেওয়া হয় ছাত্রীদের। এত দিন সেখানে নুন-ভাত দেওয়া হচ্ছিল। ছবি- উত্তম দত্ত

মিড ডে মিলের নুন-ভাত রাতারাতি বদলে হল ডিম-ভাত। মঙ্গলবার ডিমের ডালনা না হলেও সিদ্ধ ডিম জুটেছে হুগলীর চুঁচূড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলের ছাত্রীদের পাতে। সোমবার ওই স্কুলে মিড ডে মিলের নুন-ভাত নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে রাজ্যের শিক্ষা ও রাজনৈতিক মহলে। অভিযোগ ওঠে দুর্নীতিরও। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সাসপেন্ড করে দেওয়া হয় স্কুলটির প্রাক্তন ও বর্তমান দুই টিচার ইন চার্জকেই।

কয়েক দিন ধরেই চুঁচূড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে মিড ডে মিলে কখনও নুন-ভাত আবার কখনও ফ্যান-ভাতই ছিল মেনু। হুগলীর সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সোমবার বিষয়টা ‘হাতে নাতে ধরে ফেলেন’। এরপরই নড়েচড়ে বসে জেলাপ্রশাসন ও রাজ্য শিক্ষা দফতর। ফল স্বরূপ মঙ্গলবার মিড ডে মিল দিতে দেরি হলেও ছাত্রীদের দেওয়া হয় ডিম-ভাত। এদিন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই স্কুলে চলে একের পর এক নাটক। সকাল ১০টা নাগাদ বর্ধমান থেকে স্বপন দত্ত বাউল চলে আসেন স্কুল চত্বরে। তিনি মিড ডে মিল নিয়ে গান বেঁধে একতারা নিয়ে শোনাতে থাকেন বেশ কিছুক্ষণ। এরপর দুপুর একটার পর দেখা যায় এক পেটি ডিম ঢুকছে স্কুলে। এরই মধ্যে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় স্কুলে চলে আসেন। জানা যায়, তিনিই অর্ডার দিয়ে মুদিখানা দোকান থেকে ডিম আনিয়েছেন। ঘড়িতে তখন দুপুর দেড়টা।

এদিকে এদিন গৌরীকান্তবাবু অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন স্কুলের শিক্ষিকাদের একাংশের বিরুদ্ধে। শিক্ষিকারাও পাল্টা অভিযোগ করেন। স্কুলের মিড ডে মিলকাণ্ডের জন্য প্রাক্তন ও বর্তমান টিচার ইন চার্জ সমিতা কুশারী এবং পূর্বা মুখোপাধ্যায়কে সোমবার রাতেই সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এদিন সকালে সদর মহকুমা শাসক অরিন্দম বিশ্বাস ওই স্কুলে গিয়ে ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক করেন স্কুলের শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির সভাপতি গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও মঙ্গলবার বলেন, “খুব শীঘ্রই সমস্ত স্কুলের রান্না ঘরে সিসি টিভি বসানো হবে, যাতে মিড ডে মিল ‘মনিটরিং’ করা যায়। আগামিকাল জেলার ১০০০টি স্কুলে আমাদের প্রশাসনিক টিম পরিদর্শন করবে। দেখা হবে মিড ডে মিল ঠিক মতো খাওয়ানো হচ্ছে কি না। চুঁচূড়ার স্কুলের মিড ডে মিলের অনিয়ম নিয়ে শিক্ষা দফতর তদন্ত করছে।” তিনি আরও জানান, ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা নেই। শীঘ্রই ওই পদে নিয়োগ করা হবে। ওই স্কুলের মিড ডে মিল সংক্রান্ত হিসেব না মেলা পর্যন্ত পুরসভার মিড ডে মিল তহবিল থেকে ছাত্রীদের স্বাভাবিক নিয়মে মিড ডে মিল দেওয়া হবে।

এদিন স্কুলে গিয়ে গৌরীকান্তবাবু অভিযোগ করেন, এতদিন ধরে যে ছাত্রীরা নুন ভাত খাচ্ছে তা তিনি জানতেন না। জানলে তিনিই সব ব্যবস্থা করে দিতেন। এদিনও তিনি দাবি করেন, এসব অন্তর্ঘাত। তাঁর ব্যাখ্যা, স্কুলের শিক্ষিকারা সবাই এবিটিএ-র এর সদস্যা ছিলেন। এখন দলবদল করে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন। একথা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষিকারা। তাঁদের বক্তব্য, এর আগে বহুবার গৌরীকান্তবাবুকে তাঁরা সব বলেছেন। কিন্তু তিনি কর্ণপাতই করেননি। এই চাপান-উতোরের মধ্যেই সদর মহকুমা শাসক অরিন্দম বিশ্বাস এসে দু’পক্ষকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন এবং বেশ কিছু নির্দেশ দিয়ে যান।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Mid day meal scam at hoogly in west bengal