আমফানের জেরে পরিকাঠামোয় চাপ, রাজ্য চাইছে ধীরে ধীরে ফেরানো হোক পরিযায়ীদের

স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন ঝড়ের কারণে রাস্তা, স্কুল ও অন্যান্য পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবাও চাপের মুখে ও ঝড় কবলিত এলাকায় খাদ্য সংকট চলছে।

স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন ঝড়ের কারণে রাস্তা, স্কুল ও অন্যান্য পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবাও চাপের মুখে ও ঝড় কবলিত এলাকায় খাদ্য সংকট চলছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Migrant Special Train

ফাইল ছবি।

পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেছেন সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিকল্পিতভাবে ও ধীরেধীরে পাঠানোর ব্যাপারে অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে সবসময়েই যোগাযোগ রেখে চলছিল। এ ব্যাপারে তিনি গত সপ্তাহে আমফান সাইক্লোনের দাপটে দক্ষিণবঙ্গের ভয়াবহ পরিকাঠামোগত ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন।

Advertisment

তৃণমূল কংগ্রেস সরকার রেলমন্ত্রককে একদিনে ১৫টির বেশি ট্রেন না পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে যাঁরা ফিরছেন তাঁদের বাড়িতেই কোয়ারান্টিন করতে চায় সরকার কারণ গ্রামের বাড়ি ও স্কুলগুলি সাইক্লোন ত্রাণ শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আমাদের ক্ষমতা অনুসারে গড়ে ১০ থেকে ১৫টি ট্রেন নিতে পারি। এ ব্যাপারে অন্যরাজ্যগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্য রাজ্যগুলি থেকে সড়কপথেও মানুষদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। নেপাল ও ভূটান থেকে প্রতিদিন মানুষ এ রাজ্যে আসছেন। কয়েকলক্ষ মানুষ পশ্চিমবঙ্গে এসে গিয়েছেন। ফলে আমাদের উপর চূড়ান্ত চাপ রয়েছে এবং আমরা যতদূর সম্ভব বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছি।

মোবাইল-ইন্টারনেট নয়, আমফান বিধ্বস্ত বাংলায় আপনজনের খবর এনে দিচ্ছে হ্যাম রেডিও

Advertisment

রাজ্যে যে ২২৫টি পরিযায়ীদের নিয়ে ট্রেন আসার কথা তার মধ্যে এদিন পর্যন্ত ১৯টি এসে পৌঁছিয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন ঝড়ের কারণে রাস্তা, স্কুল ও অন্যান্য পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবাও চাপের মুখে ও ঝড় কবলিত এলাকায় খাদ্য সংকট চলছে।

তিনি বলেন, “এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি যাতে পরিকল্পিত ও ধীর গতিতে পরিযায়ীদের ফেরানো যায় এবং যাতে উভয় রাজ্যের পরিকল্পনাও  বাস্তবায়িত হয়।”

আলাপনের দাবি, কিছু রাজ্য পরিযায়ীদের পাঠানোর ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করছে। “আমাদের মুখ্যসচিব সে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে কথা বলছেন যাতে একসঙ্গে কাজ করা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার চেষ্টা করছে যাতে কোয়ারান্টিন সেন্টারের উপর চাপ না পড়ে এবং মানুষের সংক্রমণের না বাড়ে, সে কারণে বিভিন্ন সীমান্তে ও বিভিন্ন স্টেশনে কিছু পদ্ধতি সরল করার চেষ্টা করছে। সে কারণেই আমরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনের বদলে হোম কোয়ারান্টিনের গাইডলাইনের উপর বেশি জোর দিচ্ছি।”

যাঁরা উপসর্গবিহীন ও মৃদু উপসর্গযুক্ত তাঁদের হোম কোয়ারান্টিনে যাওয়ার কথা বলছে রাজ্য। যাঁদের কোভিড-১৯ উপসর্গ বেশি তাঁদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। “যেসব জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরছেন, সে এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বিধি এবং হোম কোয়োরান্টিনের ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করার অনুরোধ করছি আমরা। যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের সম্পূর্ণ আলাদা জায়গায় রাখা উচিত। সে কারণে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিন আমরা কঠোরভাবে পালন করতে চাই। সে কারণে কিছু নিয়মবিধি সরল করা হচ্ছে।”

করোনা আক্রান্ত তৃণমূল বিধায়ক, কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরুক। অমিত শাহজি তাঁর চিঠিতে এ কথা উল্লেখ করেছেন। এখন সাইক্লোনের বাহানায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার বিষয়টি আরও পিছিয়ে দিতে চাইছেন মমতা।”

ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন যাঁরা বিদেশ থেকে ফিরছেন তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মাবলী মানতে হবে। যাঁরা টাকা দিয়ে হোটেল কোয়ারান্টিনে থাকতে চান তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার তেমন ব্যবস্থা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

COVID-19 Lockdown Migrant labourer amphan