পরিযায়ী শ্রমিকদের কেন্দ্রের গরীব কল্যাণ রোজগার যোজনার অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অনলাইন শুনানির মাধ্যমে রাজ্যকে এই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি জেলাশাসককে এক সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারির সমস্যা কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর ও নির্দিষ্ট কতৃপক্ষকে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যান অভিযানে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সারা দেশের ১১৬টি জেলা ওই তালিকায় আছে বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। ওই তালিকায় এই রাজ্যের কোনও জেলার নাম নেই। জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশের পর মামলাকারী বাঘমুন্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতর বক্তব্য, "এই রায়ে প্রমানিত রাজ্য সরকার তালিকা পাঠানো নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারও এই প্রকল্প নিয়ে এই রাজ্যের জেলাগুলি নিয়ে সঠিক ভূমিকা নেয়নি।" আদালত নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, পুরুলিয়ায় ফেরত শ্রমিকরা সংশ্লিষ্ট যোজনার উপযুক্ত। আদালত জানিয়েছে, কোনও সন্দেহ নেই যে, সব দিক দিয়ে প্রশাসনিক উচ্চপর্যায় ছাড়াও এই যোজনার পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা অনুযায়ী এর প্রক্রিয়া চলবে।
লকডাউন শুরু হতেই বিশেষ ট্রেনে বা নিজেদের উদ্যোগে বাইরের রাজ্য থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক এই রাজ্যে ফিরে আসে। ২০ জুন কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যান অভিযান প্রকল্পের ঘোষণা করেন। যে জেলায় ২৫ হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে সেই জেলা এই প্রকল্পের আওতায় আসবে। নেপাল মাহাত বলেন, "এই তালিকায় পুরুলিয়া শুধু নয়, এই রাজ্যের কোনও জেলার নাম নেই। পুরুলিয়ায় আমার মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন ভাবে সাহায্য পেয়েছেন। তাঁদের নামের তালিকা, ফোন নম্বর সব আছে। আমি জেলাশাসক, মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে টুইটও করেছিলাম, চিঠিও দিয়েছিলাম।" আমার জেলায় ২৫ হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক এসেছে কিন্তু পুরুলিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হল না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক। তিনি বলেন, "জেলাশাসক আমাকে জানায় ৩০ জুন অবধি ৪০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় এসেছে। এই নথি নিয়ে আবার চিঠি দিলাম কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাতেও কোনও সাড়া মিলল না। শেষমেশ ন্যায় বিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।"
পরিযায়ী শ্রমিকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা পুরুলিয়া জেলার। আবেদন নিবেদনে কাজ না হওয়ায় জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নিজের নামে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন নেপাল মাহাত। গত বুধবার চূড়ান্ত শুনানি হয়। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ, জেলাশাসক পুরো বিষয়টা নোট দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠাবেন। বিধানসভার কংগ্রেসের ডেপুটি লিডারের দাবি, "এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার যে কোনও তালিকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠায়নি তা আদালতের নির্দেশে প্রমান হয়ে গেল। তৃণমূল কংগ্রেস মিথ্যা বলেছে। রাজ্য সরকারি আইনজীবী বলছেন লিস্ট পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক 'আমি সমর্থন করছি'। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী থ্রু প্রপার চ্যানেলের কথা বলেছেন।"