অনেকেই আছেন যারা অন্যদের একটু আধটু নকল করতে বা মিমিক্রি করতে বেশ ওস্তাদ। কিন্তু তাই বলেই একশো- ছুঁইছুঁই সেলিব্রিটিকে নকল করা কী মুখের কথা! তেমনই এক কাণ্ড ঘটিয়ে অসাধ্য সাধন করেছেন মালদার অভিষেক সাহা। তার তাতেই জিতে নিয়েছেন 'ইন্ডিয়া'স ওয়ার্ল্ড রেকর্ড' সহ একাধিক পুরষ্কার। মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসেবে এই অ্যাওয়ার্ড পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন পেশায় বহুজাতিক সংস্থার কর্মী অভিষেক।
২০২৩ সালের এপ্রিলে হঠাৎ করেই একটি সুযোগ আসে। তিন ঘন্টার সেই অনুষ্ঠান জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় অভিষেকের। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেন তিনি। জিতে নেন ন্যাশানাল অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ডও। সেই থেকে শুরু। না থামার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে অভিষেক। স্রেফ নিজের দক্ষতার জেরে জিতে নিয়েছেন একের পর এক পুরষ্কার।
পেশার পাশাপাশি নিজের শখটাকেও সমান ভাবে প্রাধান্য দিয়েছেন অভিষেক। ছোট থেকে কিছু আলাদা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তেমন ভাবে কিছু করে ওঠা হয়নি। কলেজ জীবনে অনেকের গলা নকল করতেন তিনি। কিন্তু সেটা নিয়ে যে এগোবেন বা তার দৌলতেই যে জগতজোড়া নাম হবে অবিষেকের তা ঘুনাক্ষরেও ভাবেন নি তিনি। অভিষেকের আড়াই বছরের মেয়েকে উৎসাহ দিতেই ফের মিমিক্রি শুরু করেন। তার তাতেই মেলে সাফল্য। ভবিষ্যতে মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসাবে বিশ্বরেকর্ড গড়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখেছেন তিনি।
বেথানি মিশন স্কুল রায়গঞ্জ থেকে মাধ্যমিক, মালদা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি টপকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক হন অভিষেক। এরপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিএ শেষে বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত অভিষেক। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী ও বছর আড়াইয়ের ফুটফুটে মেয়ে।
৯২ জন জন গায়কের কণ্ঠ নকল করে ইণ্ডিয়া'স ওয়ার্ল্ড রেকর্ড-এর খেতাব জিতে সকলকে চমকে দিয়েছেন অভিষেক। মিমিক্রির পাশাপাশি গান গাওয়াটা তার কাছে একটা নেশা। একই সঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেতা, রাজনীতিবিদ এবং ক্রিকেটারদের কণ্ঠও নকল করতেও রীতিমত পারদর্শী তিনি। ভবিষ্যতে নিজেকে প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে, গানের ক্যাটাগরিতে মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসাবে দেখতে চান অভিষেক।
মিমিক্রি ছাড়াও ভালবাসেন গান গাইতে। এর পাশাপাশি নাচ, অভিনয়, লেখালেখি সেই সঙ্গে মানুষকে অনুপ্রেরণা দিতেও তিনি ভালবাসেন। পরিবারের সদস্যদের থেকে বরাবরই সাপোর্ট পেয়ে এসেছেন তিনি। অভিষেক বলেন, 'পরিবারের মানুষদের পাশে না পেলে এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব ছিল না। আমার বাবা, মা, স্ত্রী, বোন, মেয়ে সকলেই আমাকে এই কাজে বিশেষ ভাবে উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছেন'।