রাষ্ট্রপতির রূপ নিয়ে অখিল গিরির কুমন্তব্যে তোলপাড় অবস্থা। সোচ্চার বিজেপি। এফআইআর থেকে মহিলা কমিশনে অভিযোগ- সবই হয়েছে। এসবের মধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা সম্পর্কে বিরোদী দলনেতার মন্তব্যে হইচই পড়ে যায়। শুভেন্দুর ওই মন্তব্যকেই বিজেপি বিরোধী হাতিয়ারে রূপান্তরিত করে রাজ্যের শাসক দল। জোড়-ফুল দাবি করে, 'মহিলাদের সম্মান নিয়ে তাঁদের উপদেশ, নিষ্ঠুর পরিহাস।' শুধু সরব হওয়াই নয়, এবার পদ্ম বাহিনীর কায়দাতেই বিজেপিকে বাণ মারার চেষ্টায় তৃণণূল কংগ্রেস। বুধবার মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত সোমবারই রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। কিন্তু, একইসঙ্গে বীরবাহা হাঁসদাকে নিয়ে করা শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, 'বীরবাহা তো আদিবাসী পরিবারের মেয়ে। একটা সাংস্কৃতিক পরিবারের মেয়ে। তাঁকে যদি কেউ বলে জুতোর নিচে রেখে দেওয়ার মতো, সেটা কি রুচিকর? দাঁড়কাকের মতো দেখতে বলাটা কি রুচিকর?'
মঙ্গলবার ডামন্ড হারবারে একই ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া নিশানা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, 'অখিল গিরির মন্তব্য সমর্থন করে না দল। ওই দিনই অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্পষ্ট ভাবে। আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার জন্য় ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু বীরবাহাকে নিয়ে ওঁর (শুভেন্দু অধিকারী) মন্তব্যে ক্ষমা চাইতে পারবেন বিজেপি নেতৃত্বের। সে ক্ষমতা আছে ওঁদের?'
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে তাঁর দিকে। গত দু'দিনে এটা সাফ বুঝেছেন জঙ্গলমহলের আদিবাসী রমনী মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। এরপরই বুধবার ঝাড়গ্রাম থানায় তাঁকে নিয়ে বিরোধী দলনেতার 'অপমানকর' মন্তবব্যের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তারপর লোকসভা নির্বাচন। সরগরম বাংলার রাজনীতি। আদিবাসী মন জয়ে আপাতত উভয় পক্ষেরই হাতিয়ার এখন অখিল গিরি ও শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য। যার রেশ গত কয়েকদিনে পরতে পরতে মলছে। অখিল গিরির বিরুদ্ধে দিল্লির থানায় এফআইআর করেছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। জাতীয় মহিলা কমিশনে নালিশ ঠুকেছেন সৌমিত্র খাঁ। মন্ত্রীকে বরখাস্তের দাবিতে শুভেন্দুরা রাজ্যপালকে দাবিপত্র পেশ করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
অ্যদিকে তৃণমূল বীরবাহাকে নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে সরব হয়ে বিজেপি যে আদতে আদিবাসীদের বিপক্ষে তা বোঝাতে মরিয়া। সেই দাবি পোক্ত করতে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাই এবার পাল্টা এফআইআর ঠুকলেন বিরোদী দলনেতার বিরুদ্ধে।