বিগত কয়েকদিন ধরেই 'চোর চোর' ধ্বনিতে মুখরিত বিধানসভা। সোমবার উত্তাপ আরও বাড়ল। আর শুধু মুখে নয়, তৃণমূলকে আক্রমণে এবার 'মমতা চোর' লেখা টি-শার্ট পড়লেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা। সেই পড়েই বিধানসভা ও ধর্মতলা উত্তাল করেছেন গেরুয়া বাহিনী। শুভেন্দুর টি-শার্টে 'মমতা চোর' লেখা দেখেই সোচ্চার হয়েছে জোড়-ফুল শিবির। এ ধরনের টি-শার্ট পরে বিরোধী দলনেতা রাজ্য এবং রাজ্যবাসীকে অবমাননা করেছেন বলে দাবি তৃণমূলের। তবে এখানেই শেষ নয়, বিজেপি বিধায়কদের সবক শেখাতে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ফের পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। হেয়ার স্ট্রিট ও ময়দান থানার পুলিশকে চিঠি লিখে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে আর্জি জানিয়েছেন চন্দ্রিমাদেবী।
সোমবার রাতেই হেয়ার স্ট্রিট ও ময়দান থানায় চিঠি দিয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'খুবই বিস্ময়কর যে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার এক জন সদস্য এ ধরনের লেখা টি-শার্ট পরে ঘুরছেন! এটা অপরাধ। ফৌজদারি দণ্ডবিধিতেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর পদকে অবমাননা করা লজ্জাজনক। কোনও মানুষের বিরুদ্ধেই এ ধরনের শব্দ প্রয়োগ উচিত নয়। এই নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন- উঠে দাঁড়াতে হবে, দিতে হবে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা, ‘বাংলার মাটি’ গান নিয়ে বড় নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
গত ২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় বিজেপির সভা ছিল। রাজ্যের দুর্নীতি ও বঙ্গে কেন্দ্রীয় সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বঞ্চিতদের নিয়ে এই সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছিলেন প্রধান বক্তা। সে দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতার নেতৃত্বে তৃণমূল বিধায়কেরা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁরা নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে নিশানা করেন। আক্রমণের অভিমুখে ছিলেন শুভেন্দুও। তৃণমূলের ধর্না থেকে স্লোগান ওঠে, 'বাপ চোর, বেটা চোর, বিজেপির সবাই চোর। মোদী চোর, অমিত শাহও চোর।' এর মধ্যেই বিধানসভায় হাজির হন শুভেন্দু সহ বিজেপি বিধায়করা।
তৃণমূলের স্লোগান শুনে পাল্টা 'মমতা চোর' বলে চেঁচাতে থাকেন বিরোধী দলনেতা, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষরা। উত্তেজনা ছড়ায় বিধানসভা চত্বরে। এর মাঝেই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় শাসক শিবিরে। অভিযোগ সেই সময়ও স্লোগান দিচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়করা। প্রতিবাদে থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ১১ বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে। তাঁদের লালবাজারে তলব করা হয়। পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিজেপি বিধায়করা। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর পর্যবেক্ষণ, জাতীয় সঙ্গীত আগে থেকে ঘোষণা না করে যখন-তখন গাওয়া যায় না।