এ রাজ্যে বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় কম। মাঝে মধ্যেই এই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, তাঁরই মন্ত্রিসভার বর্ষীয়ান সদস্যই বাংলার বেকারত্ব নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রশ্ন তুলে দিলেন। যাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে আলোড়ন। গুঞ্জন জোড়া-ফুলের অন্দরে। মমতা সরকারকে বিঁধতে নয়া অস্ত্র পেল বিরোধী শিবির।
কী বলেছেন মন্ত্রী?
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে এডুকেশনাল ফেয়ার। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সেখানে নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এ দিন উদ্বোধনে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, হুমায়ুন কবীরদের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
বক্তৃতার সময় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে এ দিন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলে বসেন, 'সব শিক্ষিত বেকার তৈরি হয়ে গেল। মাধ্যমিক দিয়েছে ১২ লাখ। পাস করেছে ৮৬ শতাংশ। এরপর রয়েছে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতোকত্তোর, পলিটেকনিক। এত ছেলে তৈরি হচ্ছে প্রতি বছর। কিন্তও ওদের ঘুরে বেড়াচে হচ্ছে। এখন আর শুধু গ্রাজুয়েট, এমএ পাস করে চাকরি জুটছে না।'
পাশাপাশি খড়দহের বিধায়কের দাবি, 'আমার কাছে প্রত্যেকদিন ১০ জনের মধ্যে ৫ জন, কখনও কখনও তারও বেশি শুধু চাকরি চাইতে আসে। এরা কী করবে?' এরপরই মন্ত্রী বলেন বেকারত্ব ঘোচাতে কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন- প্রতিবন্ধকতাকে জয়! ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে ‘হিরো’ আলম
যদিও পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থান ও বেকারত্ব নিয়ে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের শনিবারের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যাবাহী।
মন্ত্রীর দাবির প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, 'মন্ত্রী বাস্তব মন্তব্য করেছেন। রাজ্যের চাকরির সংস্থান নেই। সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পের কথা বললেও ইনফোসিস সহ বাকি সংস্থাগুলো বাংলা ছাড়ছে। রাজ্যের কর্মসংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শোভনবাবু ঠিক কথা বলেছেন।'
আরও পড়ুন- গলার ব্যথায় ভাত গিলতেও কষ্ট, মারণ ব্যধি হেলায় উড়িয়ে স্বপ্ন ছুঁলেন সামিনা
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, 'শোভনবাবু যুক্তি দিয়ে বুঝেই সত্যি কথা বলেছেন। মনে হয় ওনার চাকরিটা এবার আর থাকবে না। বাংলার অবস্থা খুব খারাপ।' সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীয় কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রী যে অসত্য কথা বলছেন তা রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রীর দাবিতেই সাফ হয়ে গেল।'