কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পরিদর্শনের ঠিক আগের দিন আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের হালহকিকত দেখলেন রাজ্য়ের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার কখনও হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি চালালেন, আবার লঞ্চে বিপর্যস্ত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন। কথা বললেন দুর্গতদের সঙ্গে। এলাকা ঘুরে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিলেন, "আমার উপলব্ধি স্থায়ী বাঁধ তৈরি করা দরকার। যদিও তার জন্য় অনেক টাকার প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় দল আসছে, তাঁদের কাছে মুখ্য়সচিবের মাধ্য়মে দাবি জানানো হবে।"
এদিন পাথরপ্রতিমা কলেজ ময়দানে পরিবহণমন্ত্রীর হেলিকপ্টার ল্য়ান্ড করে। তারপর গাড়ি করে পাথরপ্রতিমার লঞ্চ ঘাট। সেখান থেকে লঞ্চে মন্ত্রী উত্তর গোপালনগরের নারায়নীতলা, বঙ্কিম মাইতির ঘাটের পরিস্থিত দেখেছেন। এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ এলাকা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রশাসন ও স্থানীয় বিধায়কদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য় জেনে নেন। শুভেন্দুবাবু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "ইতিমধ্য়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণা, উত্তর ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের অনেক জায়গা অমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে দুটো পলিসি নেওয়া হয়েছে। একটা 'টেম্পরারি রেস্টোরেশন' আর একটা 'পার্মানেন্ট এস্টিমেট এন্ড প্লানিং'। 'পার্মানেন্ট এস্টিমেট ও প্লানিংয়' এর জন্য় অনেক অর্থের দরকার। কেন্দ্রীয় দল আসছে। আমরা মুখ্য়সচিবের মাধ্য়মে তাঁদের কাছে দাবি জানাব।"
মন্ত্রী বলেন, "এদিন কপ্টার থেকে বাসন্তী, গোসাবা ও কুলতলি দেখেছি। তাছাড়া লঞ্চে করে সাইক্লোন ধ্বস্ত নানা এলাকা পরিদর্শন করেছি। সুন্দরবনের ব্য়াপক ক্ষতি প্রত্য়ক্ষ করলাম। পাথরপ্রতিমার গোপালনগরসহ পাঁচটি পয়েন্ট পরিদর্শন করেছি। সাগরের বঙ্কিমনগরে কাজ চলছে, মৌসুনি দ্বীপ ও গোসাবাতেও ভাল কাজ হয়েছে। আমি ধামাখালি থেকে লঞ্চে উঠে ১৫ টা পয়েন্ট দেখেছি। কাল-পরশুর জোয়ারে উত্তর ২৪ পরগণা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তার কারণ আছে। সেখানে ১৪৯ জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের জলে যাতে ফিসারিগুলির কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।"
আমফানের ঝড়ে লন্ডভন্ড পাথরপ্রতিমা। ঘরের চালা, পান বরোজে ব্য়াপক ক্ষতি হয়েছে। এলাকার বিধায়ক সমীর জানা বলেন, "মন্ত্রী এলাকার বেহাল দশা দেখলেন। মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে রাজাভল্লবপুরের গোবিন্দপুর আবাদ, শ্রীধরনগরের রঞ্জিতের ঘাট, রামগঙ্গার ভাড়াতলা, গোপালনগরের নারায়নীতলাসহ বহু জায়গায়। ১৫টি অঞ্চলের মধ্য়ে ১৪ অঞ্চলই ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা মন্ত্রীর কাছে ১৫-১৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে জমি কোনও সমস্য়া হবে না।"