ফের নারী নিগ্রহ কলকাতায়, এবার শিকার কলকাতা শহরের এক জনপ্রিয় টলি অভিনেত্রী। একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, ১৮ জুন রাতে কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতীর হাতে নিগৃহীত হন তিনি।
অভিযোগকারিনীর ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী, রাত ১১.৩০ নাগাদ একটি উবের ক্যাবে উঠেছিলেন তিনি এবং এক সহকর্মী। এক্সাইড মোড় থেকে বাঁদিকে যেতে গিয়ে একটি বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর ক্যাবের। বাইকের আরোহী হেলমেট-বিহীন যুবকরা তাঁর ক্যাবের ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে। কিছুক্ষণের মধ্যে জনা পনেরো যুবক সেখানে হাজির হয় এবং ড্রাইভারকে বের করে মারধর করতে শুরু করে। ঘটনার কিছুটা ভিডিওবন্দি করেন অভিনেত্রী। তাঁর অভিযোগ, তিনি রাস্তার অন্য পারে অবস্থিত ময়দান থানায় সাহায্য চেয়েও পান নি।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলেও খবর।
পোস্টে তিনি বলেছেন, তিনি গাড়ি থেকে নেমে ময়দান থানায় ছুটে গিয়ে সাহায্য চাইলে সেখানকার এক পুলিশকর্মী জানান, ওই এলাকা ময়দান থানার আওতায় নয়, ভবানীপুর থানার আওতায় পড়ে। তা সত্ত্বেও অভিনেত্রীর জোরাজুরিতে কিছু পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকদের নিরস্ত করার চেষ্টা করলে তাঁদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় তারা। এরও পরে, রাত বারোটা নাগাদ, ভবানীপুর থানা থেকে দুজন পুলিশকর্মী আসেন।
অভিযোগকারিণী র পোস্ট অনুযায়ী, এরপর তিনি ওই উবের ড্রাইভারকে অনুরোধ করেন যেন তিনি তাঁকে এবং তাঁর সহকর্মীকে লেক গার্ডেনসে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। কিন্তু তিনটি বাইকে তাঁদের লেক গার্ডেনস পর্যন্ত ধাওয়া করে ছ'জন যুবক, এবং গাড়িতে পাথর ছুড়ে ভাংচুর চালায়। এতেও না থেমে সরাসরি অভিযোগকারিনীকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে তাঁর ফোন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করে যাতে ভিডিওটি না পাওয়া যায়। অভিনেত্রীর চিৎকারে এবার সেখানে জড়ো হন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ‘মেলানো যায় না, আমূল পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে এনআরএসে’
রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনার এফআইআর দায়ের করতে চারু মার্কেট থানায় গেলে কোনও মহিলা পুলিশকর্মীর দেখা পান নি নিগৃহীতা। সেখানেও ভবানীপুর থানায় যেতে বলা হয় তাঁকে, কিন্তু অনেক ঝক্কির পর এফআইআর দায়ের করতে তিনি সক্ষম হন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। তবে একই ঘটনার দুটি এফআইআর নেওয়া যায় না, এই নিয়ম দেখিয়ে ড্রাইভারের অভিযোগ গৃহীত হয় নি।
এর আগে যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। জানা গিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তবে ময়দান থানা কেন এফআইআর নেয় নি, তার কোনও সদুত্তর মেলে নি। থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসিকে ফোনে পাওয়া যায় নি।
প্রশ্ন উঠছে ময়দান থানা অভিযোগ নিতে চাইল না কেন? আইন অনুযায়ী, ঘটনা যে কোনও থানার আওতাতেই ঘটুক, অন্য এলাকার থানাও সেই সংক্রান্ত অভিযোগ নিতে বাধ্য। তাহলে এই ভোগান্তি কেন? প্রশ্ন থাকছেই।