বাহারি পোশাক পড়ে মিড ডে মিল তৈরিতে ব্যস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। কিন্তু, পড়ুয়াদের মিড ডে মিল থেকে আচমকাই উধাও হয়ে গিয়েছে মুরগির মাংস এবং সবজি। ফলে একপ্রকার ভাত আর আলুর তরকারির মাধ্যমে চলছে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা। মালদার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেই এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মিড ডে মিলে কোনওরকম সবজি দেওয়া হচ্ছে না-বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, সপ্তাহে একদিন করে যে মুরগির মাংস দেওয়া হত, সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু আলুর ঘ্যাঁট দিয়ে ভাত খেতে তাই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পড়ুয়ারা।
যদিও এজন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। জিনিসের দাম বাড়ছে অথচ মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে তুলনামূলক টাকা বাড়ানো হচ্ছে না। যার ফলেই সবজি এবং সপ্তাহে একদিন ডিম এবং মাংসের বদলে শুধু আলুর তরকারি আর ভাত দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। মালদা শহরের বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যেখানে প্রতিদিনই ৫০০ থেকে ৬০০ জন পড়ুয়া পঠন-পাঠনের জন্য স্কুলে যায়। কিছুদিন ধরে মিড ডে মিলের খাবার সাদামাটা হওয়ায় পড়ুয়াদের মধ্যে স্কুলে যাওয়ার আগ্রহটা অনেকটাই কমেছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এমনকী, সপ্তাহে বুধবার একদিন করে মাংস-ভাত খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু, হঠাৎ করে সেই মাংস রান্না বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিলে।
আরও পড়ুন- ধারাল অস্ত্রের আঘাত, উদ্ধার তৃণমূল নেতার দিদি-ভাগ্নীর দেহ, ব্যাপক আতঙ্ক কামারপুকুরে
বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সবজি-ভাত দেওয়া হত পড়ুয়াদের। এমনকী, সপ্তাহে একদিন ফল দেওয়ারও ব্যবস্থা ছিল। সেটিও পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলো পরিষ্কার করে কিছু জানাচ্ছেন না-বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। তবে, বার্লো বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গীতানি মণ্ডল জানিয়েছেন, জিনিসের দাম বেড়েছে। আর সেই জন্যই মিড ডে মিলে সবজি-মাংস কেনা সম্ভব হচ্ছে না। অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু, আমাদের কিছু করার নেই। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ১৬ সপ্তাহের জন্য মিড ডে মিলে একদিন করে মাংস দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই ১৬ সপ্তাহের মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে। নতুন করে কোনও নির্দেশ আসেনি। আর শাক-সবজির দাম এতটাই বেড়েছে যে তা কেনা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, সরকারি বরাদ্দ অর্থ নতুন করে বাড়েনি। ফলে একপ্রকার আলুর তরকারি আর ভাতের ভরসায় চলছে মিড ডে মিল। শিক্ষা দফতরকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেই জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা।