মালদার মানিকচকের গঙ্গার ঘাটে ভয়াবহ লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটল। সূত্রের খবর, সোমবার রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ এই লঞ্চডুবির ঘটনায় ২২ জন যাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। একইসঙ্গে লঞ্চে থাকা পণ্য বোঝাই ৮টি ট্রাকও ডুবে গিয়েছে। এই ঘটনার পর মুহূর্তের মধ্যেই স্থানীয় এলাকার মানুষের ভিড় জমে যায় গঙ্গার ঘাটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মানিকচক থানার পুলিশ। মানিকচকে গঙ্গার ঘাটে ছুটে যান মালদা থেকে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র এবং পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের অফিসার ও কর্মীরাও সেখানে হাজির হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ১০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ায় মানিকচক এবং মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। কীভাবে এই লঞ্চ ডুবির ঘটনাটা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ-প্রশাসন। রাত হয়ে যাওয়ায় অন্ধকারে উদ্ধার কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল তাই মানিকচক ঘাটে জেনারেটরের মাধ্যমে সার্চ লাইট বসানোর ব্যবস্থা করে প্রশাসন।
পুলিশ ও প্রশাসনকে স্থানীয় ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের রাজমহল থেকে মালদার মানিকচকে আসছিল বিশালাকার এই ট্রলার লঞ্চটি। এই লঞ্চে বালি ও পাথর বোঝাই দশটি পণ্যবাহী লরি ছিল। মানিকচকের গঙ্গার ঘাটে লঞ্চটি আসা মাত্রই বেসামাল হয়ে পড়ে। ট্রাকগুলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক গঙ্গার গভীরে তলিয়ে যেতে শুরু করে। এইসময় লঞ্চের পিছন দিকের অংশের একটি যন্ত্রাংশ মুহূর্তের মধ্যে বিকল হয়ে ভেঙে যায়। আর শেষ রক্ষা হয়নি। লঞ্চটি ডুবতে শুরু করে। সেই সময় যাত্রীদের আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন গঙ্গার পাড়ে ছুটে আসে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, অনেক যাত্রীকে চোখের সামনে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই লঞ্চে লরি চালক ও খালাসী মিলিয়ে প্রায় ১২ জন যাত্রী ছিলেন। কিন্তু প্রাথমিকভাবে অসমর্থিত সূত্রে যে ২২ জন যাত্রীর কথা বলা হচ্ছে, তার নির্দিষ্ট কোনও তালিকা মেলেনি। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা তা সরকারিভাবে এখনও জানানো হয়নি।
মূল প্রশ্ন অতিরিক্ত পণ্য-সামগ্রীর বোঝাই লরি নিয়ে চলাচল করার ফলেই কি এই বিপত্তি ঘটেছে? প্রকৃতই কতজন যাত্রী ছিলেন লঞ্চে? জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে আটটি পণ্যবাহী লরি গঙ্গার গভীরে তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকজন যাত্রী নিখোঁজের কথা শোনা গিয়েছে। তবে সংখ্যা কত, এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।