বিভিন্ন বাস সংগঠনের ডাকা তিন দিনের 'গো স্লো ট্রিপ' আন্দোলনের প্রথম দিন মিশ্র প্রভাব পড়েছে মহানগরে। সোমবার দুপুরের দিকে বেশ কিছু বাস স্ট্যান্ডেই দাঁড়িয়েছিল। ওই সময়ে রাস্তায় বাসের সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও প্রায় সব রুটেই বাস ছিল। দিনের অন্য সময়ের তুলনায় সাধারনত দুপুরের দিকে যাত্রী সংখ্যাও কম থাকে। তাই এদিন খুব বেশি অসুবিধায় পড়েন নি সাধারণ মানুষ। তবে সংগঠনের দাবি, বাকি দুদিন আন্দোলনের যথেষ্ট প্রভাব পড়বে।
অস্বাভাবাবিক হারে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রাজ্যে বাস ভাড়া বাড়ানো সহ বেশ কিছু দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে মূলত জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটস আন্দোলনের ডাক দেয়। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা এবং বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিনিবাস ও অন্য কিছু সংগঠন অবশ্য এই আন্দোলনে সামিল হয়নি। এর আগে বেশ কয়েকবার বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েও তা তুলে নেয় বাস সংগঠনগুলো।
তবে সব রুটে যে একেবারে দুর্ভোগ হয়নি তা-ও কিন্তু নয়। কলকাতার কয়েকটি রুটে বাস চলেনি দুপুরের ওই সময়ে। ফের বিকেলে বাস চলাচল শুরু হয় ওই রুটগুলোতে। এদিন ১১টার পর বাবুঘাটে অনেক রুটেরই বাসই দাঁড়িয়েছিল। ফলতা-বাবুঘাট ৮৩ বাসরুটের কর্মী সুবীর নষ্কর বলেন, "আন্দোলনকে সমর্থন করেই আমরা আজ দুপুরে বাস চালানো বন্ধ রেখেছি। এখন বাবুঘাটেই থাকব। ৩টের পর বাস চালাবো। রুটের বাকি গাড়িগুলো হয়ত অন্য দিকে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক রুটেই বাস এখন বন্ধ রয়েছে।"
এদিকে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটসের সাধারন সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা আন্দোলনের দাবি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। স্বতস্ফুর্তভাবে অনেকে বাস পথে নামান নি। কিন্তু সবটাই তো আমাদের হাতে নয়। বাসের কর্মীরাও অনেক ক্ষেত্রেই বাস পথে নামিয়েছেন। শ্রমিকদের ভূমিকা রয়েছে, এটা তো মানতেই হবে।" তবে তপনবাবুর বক্তব্য, সোমবার দুপুরে আন্দোলনের প্রভাব কম থাকলেও বাকি দুদিন ব্যাপক প্রভাব পড়বে শহরে। তাঁর দাবি, হাওড়া স্টেশনে দাড়িয়ে থাকা বাস জোর করে চালাতে বাধ্য করেছে পুলিশ। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
৭৮/১ বাবুঘাট-রহড়াবাজার রুটের একটি বাস দুপুর ১টা ২০ মিনিট নাগাদ বাবুঘাট বাস স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। ওই বাসের কন্ডাক্টরের বক্তব্য, "মালিক বা ইউনিয়নের কথা ভাবলে হবে না। ওরা ওদের কথা চিন্তা করুক। যা পারে আন্দোলনের ডাক দিক। আমাদের কাজ করে খেতে হবে। পেট চালাতে হবে তো। তাই রুটে বাস বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। সকালেও বাস চালিয়েছি, এখনও চলছে।"
বাস মালিকদের একাংশের এই আন্দোলন নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবছেন না পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আন্দোলন শুনেই বলেছেন, "এখন কোনও ভাবেই বাসের ভাড়া বাড়ানো হবে না। কী ভাবে পরিবহণ সচল রাখা যায় তা জানা আছে।"