৫০, ১০০,২০০, ৫০০ নয়। এবার দু'লাখ টাকা কেজির আম উৎপাদন হবে মালদায়। জাপানি এই আমের নাম বলা হয় মিয়াজাকি। উদ্যান পালন এবং কৃষি দফতরের উদ্যোগেই এবার এই জাতের আম চাষ হচ্ছে। ইতিমধ্যে সুদূর জাপান থেকে মিয়াজাকি প্রজাতির এই আমের চারা গাছ মালদায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই আম গাছের চারা গাছ মালদায় চলে আসবে।
স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় মালদার একাধিক প্রজাতির আমের সুনাম রয়েছে বিশ্বজুড়ে। একশটি-র বেশি প্রজাতির আম চাষ হয় মালদায়। তবে লাখ টাকার আম নেই মালদায়। এবার সেই আশা পূরণ হতে চলেছে জেলার আমচাষীদের। জাপানের লাখ টাকা দামের মিয়াজাকি এবার চাষ শুরু হচ্ছে জেলায়। ইংরেজবাজার ব্লক কৃষি দফতরের আধিকারিক ডক্টর সেফাউর রহমানের উদ্যোগেই মূলত এই প্রচেষ্টা। এক বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে জাপান থেকে এই গাছের চারা নিয়ে আসা হচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৫০টি গাছের চারা নিয়ে আসা হচ্ছে। এক একটি গাছের চারার দাম পড়েছে ভারতীয় টাকায় প্রায় এক হাজার টাকা। কৃষি দফতরের কর্তারা পরিকল্পনা নিয়েছেন, এই গাছ গুলি থেকে কলম পদ্ধতিতে আগামিতে চারা তৈরি করা হবে। মালদা জেলা জুড়ে বাড়ানো হবে চাষ।
মিয়াজাকি আম দেখতে অনেকটা ডাইনোসরের ডিমের আকৃতির। এই আমের রং সাধারণ আমের মতন নয়, আমের রং বেগুনি। তবে পাকলে লাল রঙের হয়। জানা গিয়েছে, জাপান থেকে এই আম ব্রান্ডেড করে বিশ্ববাজারে বিক্রি করা হয়। ভারতীয় টাকায় প্রায় দুই লক্ষ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এই আম। একটি আমের ওজন সর্বচ্ছ ৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
বর্তমানে শুধু মাত্র জাপানেই নয়, এই আম এশিয়ার একাধিক দেশে চাষ হচ্ছে। থাইল্যান্ড, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে। এমনকি ভারতবর্ষেও এই আমের চাষ শুরু হয়েছে। ভারতে প্রথম মধ্যপ্রদেশের এক কৃষক এই আমের চাষ শুরু করেন।
জেলা কৃষি এবং উদ্যানপালন দফতর মনে করছে, এই আমের চাষ সফল হলে জেলার চাষীদের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই চাঙ্গা হবে। স্থানীয় বাজারে লক্ষ টাকা দরে বিক্রি না হলেও কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হবে।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাপান প্রজাতির এই আম চাষের ক্ষেত্রে ৫০ জন চাষিকে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। মালদায় জাপানের 'মিয়াজাকি' আম চাষ করার জন্য 'পাইলট প্রজেক্ট' হিসেবে ইংলিশবাজার ব্লককে বেছে নেওয়া হয়েছে। চাষিদের প্রশিক্ষণ শেষ পর্যায়ে। বাছাই করা হয়েছে ৫০ জন চাষিকে। তাঁরা প্রত্যেকেই একটি করে জাপানি আমের চারা পাবেন।
মালদার সহকারি কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক ড. সেফাউর রহমান জানিয়েছেন, জাপান থেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই ৫০টি চারা এসে পৌঁছে যাবে। একটি করে চারা ৫০ জন চাষিকে দেওয়া হবে। আমরাই চাষ দেখাশোনা করব। এতে সুগারের পরিমাণ পনেরো শতাংশের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, বিটা-ক্যারোটিন এবং ফলিক অ্যাসিডে ভরা। চোখের জন্য ভালো, ক্যান্সারের ঝুঁকি ও কোলেস্টেরল কমায় এবং ত্বকের জন্যও উপকারী। আগামিতে এই আম চাষের প্রচার বাড়াতে পারলে মালদার অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই সুদৃঢ় হবে।