গন্ডগোল পাকাচ্ছে তৃণমূলের লোকজন। আর পুলিশ ধরছে আইএসএফ-সহ বিরোধী কর্মীদের। এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ভাঙড়ের তথা আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। বুধবার কার্যত তাঁর অভিযোগে সিলমোহর দিয়েই ভাঙড়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভার কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে গত ২১ জুলাই শহিদ দিবসে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, ভাঙড়ে নির্বাচনে যত অশান্তি হয়েছে, তার কারণ ছিল 'হাঙড়রা'।
তারপরেই প্রশ্ন উঠেছে, এই 'হাঙড়' বলতে কাদের বোঝাতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দলের আরাবুল ইসলাম, শওকত মোল্লাদের বিরুদ্ধে বারবার অশান্তির পিছনে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তখন সেই অভিযোগ কি আসলে তৃণমূল সুপ্রিমো হিসেবে মিথ্যে বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? দলনেত্রী হিসেবে 'হাঙড়' বলতে তাঁর নিশানায় কি তাহলে আইএসএফ ও সেই সংগঠনের বিধায়ক-নেতা নওশাদ সিদ্দিকি?
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণার পর স্বভাবত এই সব কারণে খুব বেশি আশা দেখতে পাচ্ছেন না নওশাদ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে খানিকটা সন্দেহের চোখে তাঁর বক্তব্য, 'যদি ভাঙড়বাসী সুরক্ষিত থাকে, নিরাপদ থাকে, তবে সাধুবাদ জানাব। আর, যদি এটাকে ডেমোক্রেটিক স্টেট থেকে পুলিশি স্টেট বানানোর চেষ্টা করে, যদি ভাঙড়কে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার (রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের অনুগত) করার চেষ্টা করে, সেখানে কিন্তু আমি ভাঙড়ের বিধায়ক হয়ে চুপ থাকতে পারব না। আমি বিধানসভার মধ্যে এবং বিধানসভার বাইরে আইনি লড়াইয়ে যাব।'
আরও পড়ুন- ভাঙড় নিয়ে নজিরবিহীন নির্দেশ মমতার, কলকাতার নগরপালকে কী নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর?
ভাঙড়ের অশান্তির মূল কারণ যাঁরা, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁদের থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টার অভিযোগ করে নওশাদ বলেন, 'এটাও মনে করিয়ে দিই, পুলিশকে যদি নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে দেওয়া হয়, তবে কলকাতা বা বারুইপুর পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট, এসব করার দরকারই পড়বে না। পুলিশকে তো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে না-দেওয়ার ফলে আমাদের এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। বাইরে থেকে গুন্ডা-মস্তান নিয়ে এসে আরাবুল সাহেব, শওকত সাহেব অশান্তি করল। আজকে সেটা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এসব (বারুইপুর পুলিশের থেকে কলকাতা পুলিশের হাতে আনার) কথা বলা হচ্ছে।'