বিয়ে বাড়িতে হইচই, আনন্দ উৎসবের মধ্যে দুই বছরের এক শিশুকন্যাকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গণপিটুনি দিল ক্ষিপ্ত জনতা। রবিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদা শহরের রথবাড়ি সংলগ্ন বুড়াবুড়িতলায়। গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে জখম ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই শিশুকন্যার বাবা সংশ্লিষ্ট থানায় দুই বছরের মেয়েকে চুরি করার অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম পরিচয় সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ওই শিশুকন্যার বাবা অনুপ দাস পেশায় ব্যবসায়ী। মা রুম্পা দাস গৃহবধূ। বুড়াবুড়িতলা এলাকাতেই ওই দম্পতির বাড়ি। অনুপবাবুর শ্যালকের বিয়েতেই ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার রাতে সপরিবারে শ্যালকের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা। সেই সময় বাড়ির সামনে রাস্তায় ডিজের অনুষ্ঠানে অন্য শিশুদের সঙ্গে নাচানাচি করছিলেন ওই শিশুটিও। এরই মধ্যে অপরিচিত এক যুবক ওই শিশুটিকে কোলে তুলে কথা বলতে বলতে মিষ্টি খাওয়ার নাম করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, অনুপ দাসের দুই বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে রথবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার সময়েই কয়েকজন মানুষ সন্দেহ করে। এরপরই অজ্ঞাত পরিচয় যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। এরপরই খবর পৌঁছায় বিয়ে বাড়িতে।
বিয়ের অনুষ্ঠান ছেড়ে ওই শিশুকন্যার বাবা অনুপ দাস, শ্যালক ছোটন সিং-সহ অন্যরা রথবাড়ি রেলগেটের কাছে ছুটে আসেন। এরপর তারা ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ইতিমধ্যে এলাকায় ঘটনার কথা জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারাও ছুটে আসেন। এরপরই শিশু চোর সন্দেহে শুরু হয় গণপিটুনি। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে উদ্ধার করে। এরপর তাকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনুপ দাসের পক্ষ থেকে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে। আহত যুবক এখন পুলিশি নজরদারিতে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই শিশু কন্যার বাবা অনুপ দাস বলেন, "অল্পের জন্য আমার মেয়ে পাচার চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।" এই ধরনের ঘটনা এই এলাকায় আগে কখনও ঘটেনি। তবে এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, অনেক সময়েই এই এলাকার বহু শিশু রাস্তায় খেলাধুলা করে। সেই সুযোগে কেউ শিশুকে তুলে নিয়ে যেতে পারে, এ কথা তাঁরা বাবতেই পারছেন না। পুলিশ ও প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহমের অমুরোধ জানানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ধৃতকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে বর্তমানে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।