সুপার সাইক্লোন আমপানে বিপর্যস্ত বাংলা ও ওড়িশা। এই দুই রাজ্যের সাইক্লোন বিধ্বস্ত মানুষের লড়াইয়ের কথা এবার 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা দেশ আমফান বিধ্বস্তদের পাশে রয়েছে বলে আস্বস্ত করেছেন তিনি।
এদিন 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন, কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই দুই রাজ্যের মানুষ সাহসের সঙ্গে এই বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। আমি দুই রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি ঘুরে দেখেছি। বহু সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। সমগ্র দেশ এদের পাশে রয়েছে।'
গত ২০ মে সুপার সাইক্লোন আমফানে বিধ্বস্ত কলকাতা সহ বাংলার সাত জেলা। বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলের। সুন্দরবন লাগোয়া এলাকাতেই সেদিন প্রবল গতিতে ঘূর্ণিঝড় আণফান আছড়ে পড়েছিল। ঝড় শেষে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরদিনই প্রধানমন্ত্রীকে দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘুরে দেখার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
২২ মে আমফান ধ্বস্ত দুই ২৪ পরগনার দুর্গত এলাকা আকাশ পথে পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। জানা যায়, ভারতীয় বায়ুসেনার কপ্টারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি, ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকা এবং উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট, মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাসনাবাদ, বসিরহাট আকাশপথে ঘুরে দেখেছেন মোদী। এই সময় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালও। এরপর বসিরহাটে প্রায় চল্লিশ মিনিট রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তা ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। পরে, আমফান বিধ্বস্ত বাংলার পুনর্গঠনে ১ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি। রাজ্যকে সব ঘরণের সাহায্য় করবেন বলেও ওই দিন প্রতিশ্রিুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই দিনই বাংলা থেকে ওড়িশায় যান প্রধানমন্ত্রী মোদী। আকাশ পথেই সেখানকার আমফান বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। ঘোষণা করেন, ওড়িশাকে ৫০০ কোটি সহায়তা করবে কেন্দ্র।
ভয়ঙ্কর ঘুর্ণিঝড় আমফানে রাজ্য়ে ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক লক্ষ বাড়ি ভেঙে পড়েছে। সড়ক ভেঙেছে, উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। চাষের কাজের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। ঘোষণা করেছেন ৬২৫০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য়ের। শুক্রবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই সহায়তা সরাসরি দুর্গতদের হাতে পৌঁছবে। প্রথম পর্যায়ে ৫ লক্ষ পরিবার এই সু্বিধা পাবেন। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ৫ লক্ষ উপভোক্তা এই সুবিধা পাবেন। ফলে দু'পর্যায় মিলিয়ে রাজ্যে যে ১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাদের সকলের হাতেই সহায়তা তুলে দেওয়া হবে বলেই এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন