সোমবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর-১২৭ তম জন্মদিনে কলকাতার শহিদ মিনারে 'নেতাজি লহ প্রণাম' অনুষ্ঠান তাঁকে শ্রদ্ধা জানাল আরএসএস। সেখানেই সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের দাবি, নেতাজির আদর্শেই চলে সঙ্ঘের কাজকর্ম। ভগবত বলেন, 'নেতাজির স্বপ্ন ছিল ভারত গঠন। আর সঙ্ঘও তৃণমূল স্তর থেকে সেই দেশ গঠনের কাজই করে চলেছে।'
Advertisment
শহিদ মিনারে এদিনের অনুষ্ঠানে নিজের ভাষণে দেশের 'বীর সন্তান' নেতাজির মতাদর্শ, কাজকর্ম, আপোষহীন জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন মোহন ভগবত। বলেন, 'নেতাজি ছিলেন আদর্শ নেতা। নেতৃত্ব দিতে পারতেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে বাহিনী তৈরি করেছিলেন। বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় সকলের সঙ্গে সুবিধা, অসুবিধা মানিয়ে চলতেন। নিজে রণাঙ্গনে গিয়ে যুদ্ধও করতেন। নিজের জীবন বিপন্ন করে দেশের হয়ে কাজ করাই ছিল নেতাজির জীবনের আদর্শ।' এরপরই সঙ্ঘের উদাহরণ টেনে ভগবতের দাবি, 'আমরা নির্বাচনে লড়ি না। আমাদের কোনও নামের দরকার নেই। আমাদের লক্ষ্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা। নেতাজির পথেই সঙ্ঘের কাজ। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলো। হাত উপর নিচে করো কিন্তু সবাইকে নিয়ে করো। সঙ্ঘের শাখায় এটাই শেখানো হয়।'
নেতাজির আত্মত্যাগের কথা বোঝাতে গিয়ে মোহন ভগবত বলেন, 'নেতাজি অনেক পড়াশোনা করেছিলেন। ইংরেজ সরকারের চাকরি করতে পারতেন। মোটা টাকা উপার্জন করতে পারতেন। কিন্তু দেশের জন্য সব ত্যাগ করেছেন। এটা ছিল তাঁর সারা জীবনের তপস্যা।'
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে কলকাতার বুকে আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের নেতাজি স্মরণ অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী।
সঙ্ঘ প্রধানের বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'নেতাজি সুভাষচন্জ্র বসু ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। আর সঙ্ঘ ও বিজেপি ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ায়। নেতাজি সঙ্ঘের কাজ পছন্দ করতেন না, আপনাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল ওনার। তাই সঙ্ঘ ও মোহন ভগবতের কোনও অধিকারই নেই নেতাজিকে নিয়ে কোনও কথা বলার।'
আরআরএসের অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা। ছবি পার্থ পাল
'নেতাজি লহ প্রণাম' অনুষ্ঠানে বিজেপিকে আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে দর্শকাসনে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ তথা বাংলার বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় বিজেপির সহ-সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতরা। তাঁদের সকলের পরনেই ছিল আরএসএসের পোশাক, সাদা শার্ট ও গাঢ় রঙের প্যান্ট।