বুধবার সকাল থেকেই উত্তেজনা তুঙ্গে। কয়লা পাচার মমলায় রাজ্যের আইনমন্ত্রীর মলয় ঘটকের একাধিক বাড়িতে এ এদিন সকাল থেকেই তল্লাশি চালায় সিবিআই গোয়েন্দারা। মন্ত্রীর আসানসোলের ও কলকাতার বাড়ি, সরকারি আবাসনে চলে অভিযান। ডালহাউসির সরকারি আবাসনে আইনমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল জিজ্ঞাসাবাদও করে। পরে মলয়বাবু জানান, সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা তাঁর তিনটি স্মার্ট ফোন সেট নিয়ে গিয়েছে। তবে সিমগুলি তাঁকে ব্যবহারের জন্য দিয়ে গিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মোবাইলের ডিভাইস থেকে কল রেকর্ড মিলবে। যা তদন্তে কাজে লাগবে। আগে মন্ত্রী কাদের সঙ্গে এইসব ডিভাইস থেকে কথা বলেছেন তাও জানা যাবে। অন্য প্রয়োজনে সার্ভিস প্রোভাইডারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই কাজ চলে যাবে। ফলে ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করলেও মন্ত্রীর সিম দিয়ে দেয় গোয়েন্দারা।
এ দিন প্রায় আট ঘন্টা তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। বিকেলে সরকারি আবাসন থেকে বেরনোর সময় মন্ত্রী বিচারাধীন বিষয়ে মুখ খুলবেন না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু, সন্ধ্যা গড়াতেই ধনুক ভাঙা পণ থেকে সরে আসেন মলয় ঘটক। সরকারি আবাসনেই সাংবাদিক বৈঠক করেন।
'ক্ষুব্ধ' মন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি তাঁকে বদনাম করতেই সিবিআই এত তল্লাশি চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দলের কাছে তাঁর বাড়িতে তল্লাশির সার্চ ওয়ারেন্ট ছিল না বলেও অভিযোগ করেছেন মলয়বাবু। তাঁর কথায়, 'আসানসোল পুরভোট, লোকসভার উপনির্বাচন বা রাজ্যব্যাপী পুরভোটের সময় আমাকে সিবিআই, ইডি তলব করছে। আমি ব্যাস্ত থাকায় জানিয়েছিলাম পরে যাব। ইমেলে তারিখ জানতে চাইলেও ওদের তরফে কিছু জানানো হয়নি। কেন ওই সময়গুলোতেই ডাকা হচ্ছে সেটা আপনারা বুঝেনিন। আর ১৪ হাজার টাকা নগদ যেটা পেয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছে।'
এরপরও কী কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সহায়তা করবেন মন্ত্রী? মলয় ঘটকের জবাব, 'তদন্ত সাহায্য করা আমার কর্তৃব্য। আমি সেটা করব। তবে সময় সুযোগ বুঝে ডাকলে যাব।' একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জ, 'আসানসোলের বিজেপি নেতা, কর্মী, সমর্থকরা ছাড়া কেউ বলুক যে আমি কয়লা পাচারে জড়িত, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।'
লেক গার্ডেন্সের তাঁর বাড়িটি লোনে কেনা ও পৈত্রিক বাড়িতে পরিবারের সরকেলর ভাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
এদিকে মলয় ঘটকের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে দুর্গাপুরে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক সহ দুর্গাপুর কোর্টের আইনজীবীরা৷ দুর্গাপুরে পেয়ালা কালী মন্দির সংলগ্ন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় ১৫ মিনিট অবরুদ্ধ করে দেযওয়া হয়।