গত শনিবার রাত থেকে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত মোমিনপুরের ময়ূরভঞ্জ রোড। চলে বোতল ছোড়াছুড়ি, ইটবৃষ্টি। রবিবারও উত্তেজনা বহাল ছিল ওয়াটগঞ্জ ও একবালপুর থানা এলাকায়। দুপুরের পর একবালপুর থানা ঘেরাও করে ক্ষিপ্ত জনতা। পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী। টহল দিচ্ছে র্যাফ। গোটা ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাজ্যের শোচনীয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চিঠি লিখেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রেরণের দাবি করেছেন তিনি। অন্যদিকে এ দিন মোমিনপুরে যাওয়ার পথে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিংড়িহাটায় আটকায় পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আটকানোর মুহূর্তে পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয় বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদের। চিংড়িহাটায় সুকান্ত মজুমদারের কনভয় আটকাতেই তিনি গাড়ি থেকে নেমে আসেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি ইস্ট গৌরব লালকে সুকান্ত বলেন, '৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছিলাম পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে। মোমিনপুরে গিয়ে আমরা শান্তির আহ্বান করব। আমাদের যেতে দিন ওখানে। যেতে না দিলে আমাকে অ্যারেস্ট করুন।'
ডিসি ইস্ট গৌরব লাল পাল্টা বলেন 'আমি মেনে নিচ্ছি, কিন্তু ওখানে ১৪৪ রয়েছে। কিন্তু, আপনি গেলেই ওখানকার পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে তেমন নয়। ওখানে ৪০ জনের বেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
কিন্তু, মোমিনপুরে যাতে অনড় ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। ফলে তাঁকে আটক করে পুলিশ। লালবাজারে পাঠানো হয় সুকান্ত সহ বঙ্গ বিজেপির সম্পাদক উমেশ রাই, বিজেপি নেতা আরকে হান্ডাদের। আটকের পর সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মোমিনপুরের কয়েক কিলোমিটার আগে আমাকে আটকে দেওয়া হল। ওখানকার হিন্দুদের তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। আসলে মমতা সরকার চায় না আমরা গিয়ে সেই কথা মিডিয়ার সামনে তুলে ধরা হোক। ফলে আমাদের জোর করে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।'
মোমিনপুরের ঘটনায় ফের কাঠগড়ায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার সক্রিয়তাকে দুষেছেন তৃণমূলের দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, 'ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ, ব়্যাফ গিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। শুভেন্দুদের কথা কিছু বলার নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এখানে কী করার আছে? সুকান্ত বালুরঘাটের সাংসদ। ওঁর এখানে কী করার আছে। সেখানে যাক। কিছু হলে প্রশাসন সব দেখবে।'