হাওড়ার শতাব্দী প্রাচীন মঙ্গলাহাটের এবার দিন পরিবর্তন হচ্ছে। করোনা আবহে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে মঙ্গলাহাট বন্ধ রয়েছে। হাট খোলার জন্য আন্দোলনে নেমেছেন এখানকার দোকানিরা। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ফের বসবে এই হাট। দু'সপ্তাহ ধরে পর্যবেক্ষণ করা হবে হাটের কারবার। তারপর ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এবার আর মঙ্গলবার নয়, হাট বসবে শনিবার।
করোনায় ভিড় এড়াতে মঙ্গলাহাট বন্ধ রাখার কারণে কয়েক হাজার পরিবারে রুটি-রুজির টান পড়েছে। কেনা-কাটা বন্ধ থাকায় আর্থিক অবস্থা সঙ্গীন এখানকার ব্যবসায়ীদের। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রশাসনের নির্দেশে গত ২৪ মার্চ থেকে প্রশাসন বন্ধ রাখে মঙ্গলাহাট। হাট চালু হওয়ার পর দু’সপ্তাহ দেখা হবে যে কোভিড রীতি মেনে হাটে ব্যবসা হচ্ছে কিনা। কোভিড সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে কি না সেদিকেও নজর রাখবে প্রশাসন। হাওড়া জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, যদি পরিস্থিতি বেগতিক হয় তাহলে ফের হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা থেকে খুলবে মঙ্গলাহাট। চলবে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এখন শুধু স্থায়ী দোকানগুলিই চালু থাকবে। আপাতত হাওড়া ময়দান চত্বর জুড়ে রাস্তার ফুটপাতে বসা খুচরো বিক্রেতা এবং স্টলগুলিকে বসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথম শনিবার রাতের মঙ্গলাহাটে কীরকম জমায়েত হচ্ছে, কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, সেইসব পর্যবেক্ষণ করে ধাপে ধাপে হাটের পুরানো চেহারা ফিরিয়ে আনা হবে। তবে এবার আর সোম ও মঙ্গল দু’দিন নয়, এবার মঙ্গলাহাট বসবে সপ্তাহে একদিন, শনিবার।
হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, হাওড়া ময়দানে যেখানে হাট বসে সেই চত্বরেই হাওড়া জেলা হাসপাতালসহ প্রচুর প্রশাসনিক ভবন রয়েছে। এখানে নানা কাজে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। তাই কোনওভাবেই যাতে ওই এলাকায় সংক্রমণ না ছড়ায় তা বিচার করেই রাতে হাট খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে আপত্তি জানিয়েছেন মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার পর হাট কীভাবে চালু করা সম্ভব, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁরা কিছুই জানেন না। শনিবার রাতে পাইকারি কেনাবেচার জন্য কম মানুষই আসবেন এবং ওই দিন কলকাতার একটি পাইকারি বস্ত্রহাট খোলা থাকে বলে ক্রেতার সংখ্যা আরও কমবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
হাওড়া হাট সমন্বয় সমিতির সহ সম্পাদক কানাই পোদ্দার জানান, শনিবার রাতে তো কোনও ক্রেতাই আসবে না। রবিবার হলে ভাল, তা নাহলে কোনও একটা দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাট খোলার অনুমতি দিলে ভাল হয়। তা নাহলে ব্যবসায়ীদের কোনও কাজে আসবে না। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে হাট বন্ধ থাকায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার ব্যবসায়ী চুড়ান্ত আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন