Gangasagar Story: মকর সংক্রান্তিতে সাগরে গঙ্গাস্নানের জন্য নামছেন পূর্ণার্থীরা। স্নান সেরে ভিড় করছে কপিল মুনির আশ্রমে। হাজার হাজার ভক্তদের মাঝে সাধুদের হাকডাক। এই আশ্রমের পাশেই তো নাগা সাধুদের ঘর। এখানেই বসেই এক সন্ন্যাসিনী স্বপ্ন দেখছেন সরকারি অফিসার হওয়ার।
কপিল মূল মন্দিরের সোজাসুজি দাড়ালে তার ডান পাশে সারি সারি দিয়ে থাকে নাগা সাধুদের ঘর। সাধারণত সংসার ত্যাগ করে কঠিন কৃচ্ছ্বসাধনই এঁদের কাজ। সাধারণ জীবনের লোভ ও লিপ্সা কোনওভাবেই যাদের কখনও স্পর্শ করতে পারে না। সেই নাগা সাধুদের ডেরায় বসেই আমলা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে বছর তেইশের রাজেশ্বরী।
ইতিহাসে অনার্স নিয়ে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনা শেষে তিনি হতে চান একজন দক্ষ প্রশাসক। আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ওই সন্ন্যাসিনী। নাগা সাধু মহাদেব ভারতীর পালিত কন্যা রাজেশ্বরী। দু’জনেই এসেছেন হিমাচল প্রদেশ থেকে। কপিলমুনি আশ্রমের পাশে নাগা সাধুদের আখড়ায় দেখা মিলবে বাবা-মেয়ের।
সাধুই বলছিলেন পালিত মেয়ের কথা। " আমি বছর ২০ আগে হিমাচল থেকে মুম্বই গিয়েছিলাম। তখনই ঘাটকোপার অঞ্চলে পড়ে থাকা বছর খানেকের এক শিশুকন্যাকে কুড়িয়ে পাই। ওর মা বাবার কোনও খোঁজ পায়নি। আমার আখড়াতে নিয়ে আসি। নাম রাখি রাজেশ্বরী। ছোট থেকেই পড়াশুনার ইচ্ছে। খুব ভালো ছাত্রী। মনযোগী। সব ভালোই চলছিল বছর দুয়েক আগে হরিয়ানায় এক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত লাগে। তারপর থেকে শয্যাশায়ী।"
নিজের যথা সামান্য উপার্জনে সাধুবাবা এখনও চিকিৎসা চলছে তাঁর। এমন নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রশাসক হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছাড়েনি রাজেশ্বরী। গায়ে ছাই ভস্ম মেখে বস্ত্রহীন হয়ে রয়েছেন সাধু। ভক্তরা আসছেন পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করে আশীর্বাদ নিচ্ছেন। রাজেশ্বরী বিছানায় আধশোয়া হয়ে। দুর্ঘটনার পর বহুদিন ভেন্টিলেশনে কাটিয়ে এখন একটু সুস্থ। কথাবার্তা জড়িয়ে যায়। শরীর অসাড় হলেও তবে মনোবল চাঙ্গা। আধো আধো করে বলার চেষ্টা করে "মুঝে সরকারি কালেক্টর বান্না হ্যা" রাজেশ্বরীর বাবাই বলছিলেন রাজেশ্বরী দুটি কাজ মন দিয়ে করে। একটি ঈশ্বরের প্রার্থনা। অপরটি, আইএএস হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কঠোর পড়াশোনা।