ক্ষয়ক্ষতির পরিমান লক্ষ লক্ষ টাকা। অভিযোগের তিরে বজরঙ্গবালী। হনুমানের তান্ডবে অতিষ্ট হয়ে শতাধিক গ্রামবাসী শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হলেন। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা সমস্যার সুরাহায় লিখিত আবেদন জানিয়েছেন বনদফতরের কাছে। ইতিমধ্যে হনুমানের তান্ডবে গ্রামের কয়েকশো বিঘের লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গ্রামে পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছেন বনদফতরের প্রতিনিধিরা।
পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাররপাড়ায় গত কয়েকমাস ধরেই একদল হনুমানের দাপটে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মুশকিমপাড়ার বিভিন্ন গ্রামেও হুনুমানের দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। একদিকে যেমন গ্রামের মানুষকে কামড়ে, আঁচড়ে দিয়ে জখম করছে, অন্যদিকে বিঘের পর বিঘে জমির সবজি, ফল নষ্ট করে দিচ্ছে হনুমানের দল। নিরুপায় গ্রামবাসী মাস পিটিশন জমা দিয়েছে পূর্বস্থলী থানায়।
মুশকিমপাড়ার বাররপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আখতার আলি শেখ বলেন, “আমাদের আট বিঘে জমি রয়েছে। জমিতে পেঁয়াজ, পেঁপে, ছোলা, সর্ষের চাষ হয়েছে। কিন্তু জমির ফসল নষ্ট করছে ২০-২২টি হনুমানের দল। তারা দলবদ্ধ হয়ে জমির সব ফসল খেয়ে নিচ্ছে। আমাদের গ্রাম ছাড়াও পাশের কায়বাতি, বড় মুশকিম, ছো়ট মুশকিম গ্রামেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হনুমান। আমরা মিলিত ভাবে পুলিশ ও বনদফতরের দ্বারস্থ হয়েছি।” সোমবার বিকেলে বনদফতরের একটি দল গ্রামে ঘুরে গিয়েছে। তাঁরা কথা বলেছেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। ক্ষয়-ক্ষতির কথা শুনেছেন। আখতার জানিয়েছে, “গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকরা সবজির চাষ করে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ঘোর বিপদে পড়েছেন।”
হনুমানের দলের তান্ডব বন্ধ করার কোনও উপায় দেখছে না জেলা বনদফতর। জেলা বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, “একটা-দুটো হনুমান থাকলে উদ্ধার করা সম্ভব। কিন্তু হনুমানের দল থাকলে বাগে আনা অসম্ভব ব্যাপার। জমির সবজি পাহারা দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। হাতিতে জমির ফসলের ক্ষতি করলে তবু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আইন রয়েছে। এক্ষেত্রে তেমন কোনও আইন নেই।” জেলায় হনুমানে সংখ্যার কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন দেবাশিসবাবু। তিনি বলেন, “হনুমানের দল এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ঘোরাফেরা করে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন