জিটিএ চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। শুক্রবার দাগাপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানিয়েছেন দলের সাধারন সম্পাদক রোশন গিরি। এবার থেকে সব আন্দোলনই দিল্লিকেন্দ্রীক হবে বলে দাবি করেছেন রোশন গিরি।
২০১১ সালের ১৮ জুলাই জিটিএ চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। কেন্দ্র, রাজ্য এবং মোর্চা এই চুক্তিতে সই করেছিল। কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রতিনিধি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে রোশন গিরি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে বজায় রেখেই তখন জিটিএ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে মোর্চা। এখন মোর্চা এই চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে চিঠি দিল।
তবে, জিটিএ আইনে এমন কোনও ধারা নেই যার বলে মোর্চা নিজেদের এই ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে নিলে বা কেন্দ্রীয় সরকারও মোর্চার দাবিতে সায় দিলে জিটিএ বাতিল হয়ে যাবে। মোর্চা শুধু লোক দেখানো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছে জিটিএ’র বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর। জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপার কথায়, 'এটা কোনও বাচ্চার হাতের খেলনা নয় যে মোর্চা চাইল আর জিটিএ বাতিল হয়ে গেল। মোর্চার নেতাদের রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে।'
ত্রিপাক্ষিকস্তর জিটিএ চুক্তি হলেও পাহাড়ে অশান্তি কমেনি। বিভিন্ন সময় জিটিএ চুক্তি সম্পূর্ণ কার্যকরের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে পাহাড়ে। পৃথক রাজ্যের দাবিতেও একাধিকবার উত্তাল হয় পাহাড়। রক্তাক্ত হয়েছে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং। গন্ডগোলের জেরে একসময় পাহাড় ছাড়তে হয় বিমল গুরুংকে। এরপর তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত করে গুরুং পাহাড়ে ফিরলেও সম্পর্ক চিরস্থায়ী হয়নি।
দার্জিলিং পুরসভার দখল এখন তৃণমূলের হাতে। শাসক দলের 'দাদাগিরি' রুখতে সম্প্রতি বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাংরা মিলে তৈরি করেছেন ভারতীয় গোর্খাল্যান্ড সংঘর্ষ কমিটি। সেই কমিটির সভা থেকেই গুরুং জানিয়েছিলেন যে, জিটিএ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে চিঠি দেবে। এনিয়ে তাঁরা আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন। আগামিতে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনকে কোন পথে এগোবে তা নির্ধারনে ইতিমধ্যেই গুরুংরা ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁদের রিপোর্ট দেবে।