SSC Verdict News: গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম রায়ে চাকরি চলে গিয়েছে শিক্ষক ছেলে ও বৌমার। আকস্মিক এই বিরাট খবর মন থেকে মেনে নিতে পারেননি মা। প্রবল দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকতার চাকরি চলে গিয়েছে ছেলে ও বৌমার। সেই শোকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মায়ের। এমনই দাবি মৃতার পরিবারের সদস্যদের। মৃতার নাম মঞ্জুলা যশ(৬৯)। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের সোনাকুড় গ্রামে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা ছেলে ও বৌমার ভবিষ্যতের কথা ভবে এক মায়ের এহেন মৃত্যু গোটা শিক্ষক মহলকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। এমন ঘটনায় শোকাতুর হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধার প্রতিবেশী ও পরিজনরা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পূর্ব বর্ধমান জেলায় চাকরি বাতিল হয়েছে ১০২৫ জনের। জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ৭৫০ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা। বাকি ২৭৫ জন অশিক্ষক কর্মী। এর মধ্যে গ্রুপ ডি এবং ক্লার্কও আছে।চাকরিহারাদের একজন হলেন অর্ণব যশ।
বৃদ্ধা মা মঞ্জুলা যশকে নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের সোনাকুড় গ্রামে থাকতেন ছেলে অর্ণব। তিনি বীরভূমের চাতরা গণেশলাল হাইস্কুলে ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বৃহস্পতিবার তার চাকরি বাতিল হয়। সুপ্রিম রায়ে অর্ণব বাবুর স্ত্রী চন্দ্রাণী দত্ত-র ও চাকরি চলে গিয়েছে। চন্দ্রাণীদেবী বীরভূমের নওয়াপাড়া হাই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষিকা ছিলেন। চন্দ্রাণী দত্তের দিদি ইন্দ্রাণী দত্ত শুক্রবার বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ছেলে ও বৌমার চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে জানতে পারার পর থেকেই মঞ্জুলাদেবী মুষড়ে পড়েন।মানসিক যন্ত্রণায় তিনি কাতর হয়ে পড়েন। আক্রান্ত হন হৃদরোগে।
বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বামচাঁন্দাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঞ্জুলাদেবীকে ভর্তি করা হয়।শুক্রবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।
বৃদ্ধার অকাল মৃত্যুতে যারপরনাই ক্ষুব্ধ তাঁর পরিবার ও পরিজনরা।এর জন্য তারা সকলে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।
সদ্য চাকরিহারা চন্দ্রাণী দত্তের দিদি ইন্দ্রাণী দত্ত বলেন, “যোগ্যতার সঙ্গে সাত বছর স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করার পর চাকরি বাতিল হয়ে যাবে, এটা মানতে পারছি না“। অপর আত্মীয় মৌসুমি দত্ত বলেন, ’এই রাজ্যে মহিলা, সরকারি চাকরি, কিছুই নিরাপদ নয়।“ মৃতার আত্মীয়রা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর তীব্র ক্ষোভও উগরে দেন।
চাকরি হারা শিক্ষক অর্ণব যশ বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমার এবং আমার স্ত্রীর চাকরি বাতিল হওয়ার কথা জানতে পরার পর থেকেই মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চাকরি চলে যাওয়ার জন্য তিনিও রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদের একহাত নেন।