Travel: বেড়াতে যাওয়ার জন্য বাঙালি বিশেষ কোনও সময়ের খুব একটা তোয়াক্কা করে না। অনেকেই বেশ লম্বা ছুটি নিয়ে বেড়াতে যান দূর-দূরান্তের নজরকাড়া সব পর্যটনকেন্দ্রে। তবে অনেকের আবার মন চাইলেও সেই উপায় নেই। কর্মক্ষেত্রে দিন দু'য়েকের বেশি ছুটি ম্যানেজ করা যাচ্ছে না? তবে এবার আর সেই চিন্তা নেই, মাত্র দিন দুয়েকের ছুটি পেলেই কেল্লা-ফতে! মনকে রিফ্রেশ করে আসুন। দীঘা, মন্দারমণি, তাজপুর নয়। এবার যান মৌসুনী দ্বীপে (Mousuni Island)। কলকাতার খুব কাছেই বঙ্গোপসাগর ঘেরা এই দ্বীপ অনাবিল এক আনন্দের স্বাদ এনে দেবে। মুহূর্তে ভুলে যাবেন সব স্ট্রেস।
কথাতেই আছে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে! সুযোগ পেলেই বেড়াতে যেতে চান না, এমন বাঙালির খোঁজ পাওয়া দুষ্কর। অল্প ক'দিনের ছুটিতে এবার নতুন এক সাগর পাড়ে বেড়িয়ে আসুন। বঙ্গোপসাগরের কোলে নিরিবিলি শান্ত এই সমুদ্র সৈকত মন ভরাবেই। এখানকার সমুদ্র পাড়ে রয়েছে ঝাউবনের সারি। নির্জন-কোলাহলহীন এই দ্বীপে পছন্দের মানুষগুলিকে সঙ্গে দিন দুয়েক ছুটি কাটিয়ে যেতেই পারেন। কলকাতা থেকে মৌসুনী দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১১০ কিলোমিটার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীনে পড়ে এই দ্বীপ। সুন্দরবন লাগোয়া এই দ্বীপ অসাধারণ এক বেড়ানোর অভিজ্ঞতা এনে দেবে।
মৌসুনী দ্বীপে কী দেখবেন?
মৌসুনীর সমুদ্রের দিনভর গর্জন নেই। নিতান্ত শান্ত সরল এক সাগরতটে উপরি পাওনা এখানকার স্নিগ্ধ শীতল পরিবেশ। যা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করার সুযোগ মিলবে। মৌসুনী দ্বীপ ধরে একটু হেঁটে গেলেই পড়বে ম্যানগ্রোভ মোহনা। চাইলে নৌকো ভাড়া করেও ঘুরে আসতে পারেন। মৌসুনী দ্বীপ থেকে নৌকো ভাড়া করে পাতিবুনিয়া ম্যানগ্রোভ ফরেস্টও ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়াও ট্যুরিস্ট লঞ্চে চেপে গঙ্গাসাগর ও জম্বু দ্বীপের আশপাশ থেকেও ঘুরে আসার সুযোগ রয়েছে। মৌসুনী দ্বীপ থেকে বকখালির দূরত্ব মেরেকেটে আধ ঘণ্টার মতো। চাইলে বকখালিতে বন দফতরের ইকো ট্যুরিজম পার্কেও (Eco Tourism Park) একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন মৌসুনী দ্বীপে?
কলকাতা (Kolkata) থেকে গেলে সড়ক ও রেলপথ দু'ভাবেই পৌঁছনো যাবে মৌসুনী দ্বীপে। ট্রেনে গেলে শিয়ালদহ দক্ষিণ স্টেশন থেকে আপনাকে নামখানা লোকাল ধরতে হবে। শিয়ালদহ থেকে নামখানা যেতে মোটামুটি ঘণ্টা তিনেক সময় লাগে। নামখানা স্টেশন থেকে টোটো বা অটো কিংবা ভ্যানোয় চেপে যেতে হবে হুজ্জুতের ঘাটে। সেখন থেকে ছোট্ট চিনাই নদী পেরিয়ে ওপারে উঠতে হবে। নদীর ওপার থেকেই মিলবে মৌসুনী দ্বীপে যাওয়ার টোটো বা অন্য ছোট গাড়ি। কলকাতা থেকে বাসে গেলে ধর্মতলায় পৌঁছে যান। সেখান থেকে বাসে চলে যান নামখানায়। তারপর এই একই রুট ধরে পৌঁছে যান মৌসুনী দ্বীপে।
মৌসুনী দ্বীপে কোথায় থাকবেন?
মৌসুনী দ্বীপে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার জন্য কম খরচেই এলাহি বন্দোবস্ত রয়েছে। সমুদ্রের ধার ঘেঁষে রয়েছে একাধিক টেন্ট, মাড হাউস। ছোট-ছোট কটেজেও রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত। টেন্ট-মাড হাউস বা কটেজ যাই বলন, সব জায়গাতেই প্রতি সন্ধেয় বনফায়ারের ব্যবস্থা থাকে। সমুদ্রের তীরে অসাধারণ এই ভোজন-অভিজ্ঞতা চিরজীবন আপনার মনে থেকে যাবে। মৌসুনী দ্বীপের টেন্ট-মাড হাউসগুলিতে থাকা-খাওয়া হিসেবেই জন প্রতি টাকা নেওয়া হয়। মোটামুটি একজনের জন্য থাকা-খাওয়ার খরচ পড়ে হাজার টাকার মতো। তবে এর কম-বেশিও হয়।